কক্সবাজারের টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ ঘোলার চর থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে মাঝসাগরে ট্রলার ডুবি হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকাল তিনটার দিকে শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিনের মাঝামাঝি সাগরে ‘গরা’ নামক এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। ট্রলারটিতে ১৩ জন লোক ছিলেন।
দূর্ঘটনার খবর পেয়ে সেন্টমার্টিন থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা চারটি স্পীডবোটে করে উদ্ধার অভিযানে নামে।
বিকাল পাঁচটার দিকে ডুবে যাওয়া ট্রলারের ১২ জনকে জীবিত উদ্ধার করে সেন্টমার্টিন ফিরছিল স্পীডবোট গুলো। পথিমধ্যে উত্তাল ঢেউয়ে উদ্ধারকারী একটি স্পীডবোট ডুবে যায়। ওই স্পীটবোটে ডুবে যাওয়া ট্রলারের এক যাত্রীসহ ছয়জন লোক ছিলেন।এদিকে বুধবার রাত আটটার দিকে ডুবে যাওয়া স্পীডবোটের চার ব্যক্তি সাঁতরিয়ে শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিম সৈকত সাবরাং সৈকতে উঠেন।
রাত সাড়ে দশটায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনজন ব্যক্তি নিখোঁজ ছিলেন। তাদের একজন ডুবে যাওয়া ট্রলারের যাত্রী নুর মোহাম্মদ সৈকত, অপর দুইজন স্পীটবোটে উদ্ধারে আসা ফাহাদ এবং ইসমাইল। তারা সেন্টমার্টিন দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দা।
ডুবে যাওয়া স্পীডবোট থেকে সাঁতরিয়ে ফেরা সেন্টমার্টিন ডেইল পাড়ার বাসিন্দা উম্মত আলী বলেন, আমরা চারটি স্পীডবোট নিয়ে সাগরে নেমে ডুবে যাওয়া ট্রলারের ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছিলাম।
ডুবে যাওয়া ট্রলারের যাত্রী ইসমাইলকে আমাদের স্পীডবোটে উঠিয়ে চারটি স্পীডবোট দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা করি। এসময় একটি বড় ঢেউয়ের আছড়ে আমাদের স্পীডবোটটি উল্টে যায়। আমি এবং মানিক সাঁতরে কুলে উঠতে পেরেছি। পরে আরো দুইজন উঠেছেন।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ট্রলার ডুবির খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন আরো কয়েকটি ট্রলার ও স্পীডবোট নিয়ে সাগরে উদ্ধার অভিযানে যায়।
প্রায় দুই ঘণ্টার অভিযানে ট্রলারের ১২ জনকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পরে উদ্ধার অভিযানে যাওয়া একটি স্পীডবোট ডুবে যায়। ওই স্পীডবোটে ছয়জন লোক ছিল। পরে চারজন সাঁতরিয়ে কূলে উঠেন। রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত সময়ে ডুবে যাওয়া ট্রলারের একজনসহ তিনজন নিখোঁজ ছিলেন।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও স্পীডবোট মালিক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, উদ্ধারকারী চারটি স্পীডবোটের একটি ডুবে যায়। ওই স্পীডবোটে থাকা ছয়জনের মধ্যে চারজন সাঁতরে উঠেছেন। দুইজনকে এখনো পাওয়া যায়নি। এছাড়া ট্রলারের এক যাত্রীও নিখোঁজ রয়েছেন।
এদিকে ট্রলার ডুবির ঘটনায় উদ্ধার অভিযানকে কেন্দ্র করে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কোস্ট গার্ডের সংঘর্ষ হয়েছে। উত্তেজিত জনতাকে থামাতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কোস্টগার্ড গুলি চালিয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। এতে দ্বীপের এক কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোস্ট গার্ডের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।