শহীদ বকর স্মৃতিসংঘের উদ্যোগে নোয়াগ্রাম কালিয়া নড়াইল ২ নম্বর পুরুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মনির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো লেখক ও গবেষক, আশফাকুজ্জামানের ‘মুক্তিযুদ্ধের কণ্ঠস্বর: স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ২ নম্বর পুরুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মনি। প্রধান আলোচক ছিলেন অধ্যাপক, লেখক ও গবেষক দেদারুল আলম মুরাদ। বিশেষ আলোচক ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইমদাদুল হক মোল্লা, মুশফিকুর রহমান, এস এম লিয়াকত হোসেন ও অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার ইকরাম হোসেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইমদাদুল হক মোল্লা, মুশফিকুর রহমান ও এস এম লিয়াকত হোসেন বলেন, তাঁরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়েছেন। যুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান শুনতেন। কোথায় পাকিস্তান বাহিনী পরাজিত হচ্ছে, কোথায় মুক্তিযোদ্ধারা হামলা করছে, এসব সংবাদ তাদের ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করত। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত আরও নানা ধরনের অনুষ্ঠান তাঁদের উজ্জীবিত রাখত। এর ভূমিকা নিয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধের কণ্ঠস্বর: স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র-এর মতো বই সবার পড়া প্রয়োজন বলে মনে করেন।
ইকরাম হোসেন বলেন, ‘আমাদের বাঙালি বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসুই বেতার আবিষ্কারের পথপ্রদর্শক। বাঙালি হিসেবে আমরা গর্ব করতে পারি যে তিনিই পৃথিবীতে প্রথম বেতার আবিষ্কারের পথ দেখিয়েছেন। এ বিষয়সহ এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লেখক তাঁর বইয়ে লিখেছেন। তরুণ প্রজন্মসহ সবাই বইটি পড়ে উপকৃত হবেন বলে আশা করি।’
ফারজানা তিথি, তালহাসহ তরুণ প্রজন্মের কয়েকজন আলোচনায় অংশ নেয়। তারা বলে যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস তাদের আরও জানা প্রয়োজন। এ দেশের মুক্তিযুদ্ধের অনেক বিষয় তাদের জানা নেই। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের কণ্ঠস্বর: স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র-এর মতো বই তাদের সামনে কম আসে বলে তাদের ধারণা।
প্রধান আলোচক বইয়ের বিশদ আলোচনা করেন। প্রায় ৮০টি শিরোনামের গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ে তাঁর আলোচনায় আসে। তিনি বলেন, লেখক আশফাকুজ্জামানের বইয়ের বিষয় যেমন অনন্যসাধারণ, তেমনি তাঁর লেখাও খুব গোছানো। বিষয়ের সঙ্গে গদ্যের এমন উপস্থাপন এ বইকে আরও অনন্য করেছে। মুক্তিযুদ্ধের কণ্ঠস্বর: স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র বইটা তরুণ প্রজন্মের অবশ্যই পড়া উচিত বলে তিনি মনে করেন। যেকোনো পাঠককে এ বইয়ের বিষয় ও লেখার ধরন আকর্ষণ করবে। ইতিহাসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আশফাকুজ্জামানের এ লেখা থেকে পাঠক জানতে পারবে। তাঁর আলোচনা সবাইকে মুগ্ধ করে। দীর্ঘক্ষণ দর্শক প্রায় পিনপতন নীরবতায় সবাই আলোচনা শোনেন।
প্রধান অতিথি বলেন যে এ ধরনের বই খুব কম দেখা যায়। লেখক আশফাকুজ্জামান খুব যত্ন করে লিখেছেন। তরুণ প্রজন্মসহ সবার কাছে বইটা পৌঁছে যাওয়ার আশাবাদ রাখেন তিনি।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সৈয়দ আরশাদ আলী অ্যান্ড সবুরুননেছা গার্লস কলেজের সহকারী অধ্যাপক টিপু সুলতান। আয়োজন ও সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম লিয়াকত হোসেন। সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মুশফিকুর রহমান।
২০২৪ সালে ঢাকায় অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তাম্রলিপি প্রকাশন থেকে গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।