মতলবে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে অভিভাবক প্রতিনিধিদের মাঝে বাক-বিতন্ড ও হাতাহাতি – Newsroom bd24.
ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৮ জুন ২০২৩

মতলবে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে অভিভাবক প্রতিনিধিদের মাঝে বাক-বিতন্ড ও হাতাহাতি

চয়ন ঘোষ, (চাঁদপুর প্রতিনিধি)
জুন ৮, ২০২৩ ১:১৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মতলব দক্ষিণ প্রতিনিধিঃ চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণে ঐতিহ্যবাহী মতলবগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিতব্য অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রের অক্ষর ছোট হওয়াকে কেন্দ্র করে দুই অভিভাবক প্রতিনিধির মধ্যে বাক-বিতন্ড ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।

গত ৭ জুন রোজ বুধবার দুপুর ২টায় এই ঘটনা ঘটে। এমন অপ্রীতীকর ঘটনায় পরিক্ষা কেন্দ্রে অন্তত ৫-৬ জন শিক্ষার্থী ভয় পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা মেনে বুধবার অর্ধ- বার্ষিক পরীক্ষা আরম্ভ হয়। পরীক্ষার সময়সূচি অনুসারে ঘটনার দিন নবম শ্রেণীর ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরিক্ষার জন্য প্রণীত প্রশ্নে লেখার সাইজ তুলনামূলকভাবে ছোট হওয়ায়
ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক প্রতিনিধি আল মহসিন প্রধান প্রণয়নক্ত প্রশ্নে অক্ষর ছোট হওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের প্রশ্ন প্রনয়ণ এবং প্রকাশনার বিষয়টি গোপনীয়তার জন্য আমরা একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়ে থাকি। পরীক্ষা আরম্ভ হওয়ার ২০ মিনিট পূর্বে প্রশ্নের প্যাকেট খোলা হয়। অক্ষর ছোট হওয়ার বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে কোন সমাধানের ব্যবস্থা না করা গেলেও ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনার কোন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই বিষয়ে অভিভাবক প্রতিনিধিকে আশ্বস্ত করেন।

পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির কয়েকজন অভিভাবক প্রতিনিধি সদস্য উপস্থিত ছিলেন। পরীক্ষা আরম্ভ হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে আল মহসিন প্রধান হঠাৎ করেই নবম শ্রেণীর পরীক্ষার হলে ঢুকে পরীক্ষার্থীদেরকে হল থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানান এবং অক্ষর ছোট হওয়ার বিষয়টি অভিভাবকদের নিকট উপস্থাপন করেন এবং সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেন।
এসময় ঘটনাস্থলে থাকা অপর অভিভাবক প্রতিনিধি ইকবাল সরকার ছুটে এসে আল মহসিনকে শান্ত হওয়ার কথা বললে তাদের উভয়ের মধ্যে বাক-বিতন্ড হয়, এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটলে তারা রক্তাক্ত ও জখম হয়। এরূপ কর্মকাণ্ড দেখে পরীক্ষার হলে থাকা শিক্ষার্থীরা ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পরে।

অত্র বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি সদস্য মিরান হোসেন মিয়াজী জানান, অক্ষর ছোট হওয়ার বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রধান শিক্ষকের সাথে আলোচনা করে ভবিষ্যতে এরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধ করতে পারতাম। কিন্তু আল মহাসিন প্রধানের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ডের জন্য আমরা বিব্রত।

অভিভাবক সদস্য ইকবাল সরকার বলেন, পরীক্ষার প্রশ্নগুলো অন্যত্র থেকে ছাপিয়ে আনা হয় এবং পরীক্ষার বিশ মিনিট আগে খোলা হয়। যেহেতু একটি সমস্যা হয়ে গেছে তাই সেটার তাৎক্ষণিক কোন সমাধান ছিল না। তবে প্রশ্ন বুঝতে শিক্ষার্থীদের কোন অসুবিধা হয়নি। কিন্তু সে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাকে শান্ত হওয়ার জন্য বলি, কিন্তু সে আমার উপর চওড়া হয়।

চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ বিষয়ে অভিভাবক প্রতিনিধি আল মহসিন প্রধান মুঠো ফোনে জানান, আজ অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষার প্রথম দিন ছিল। পরিক্ষা শুরুর পরমূহুর্তে আমি বিদ্যালয়েই ছিলাম। পরিক্ষা কক্ষে দেখলাম শিক্ষার্থীরা যে প্রশ্নে পরিক্ষা দিচ্ছে সে প্রশ্নের প্রিন্টিং নিন্মমানের এবং অনেক আবছা, অক্ষর ছোট ছোট দেখা যাচ্ছে। এতে পরিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আমি জানতে পারি তাঁদের প্রশ্ন বুঝতে সমস্যা হচ্ছে, এবং উত্তর প্রদান করতে পারছে না, তাই আমি প্রথমত সহকারি শিক্ষকের সাথে কথা বলি এবং শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করি। এই পরিক্ষাটি পরবর্তীতে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অহবান জানাই। অতঃপর বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন অভিভাবকের সাথে আমি সরাসরি কথা বলি, এমন ঘটনায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং তীব্র নিন্দা জানান। এই কথার প্রেক্ষিতে আমার উপর হামলা চালানো হয়, আমি এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই। তিনি আরও বলেন এসময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ কবির হোসেন বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না, মুঠোফোনে অনেক চেষ্টা করেও আমি ওনার সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি।