রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয় দিয়ে কি পেলো বাংলাদেশ - শিশুবন্ধু মুহাম্মদ আলী   – Newsroom bd24.
ঢাকাশুক্রবার , ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয় দিয়ে কি পেলো বাংলাদেশ – শিশুবন্ধু মুহাম্মদ আলী  

এস, এম-নুর, পিরোজপুর প্রতিনিধি।
সেপ্টেম্বর ৯, ২০২২ ৫:৫২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয় দিয়ে কি পেলো বাংলাদেশ? মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর গনহত‍্যা, খুন, ধর্ষণ ও নির্যাতনের স্বীকার হয়ে ২০১৭ সালে বাংলাদেশের সীমান্তের বেড়াজাল বেদ করে মিয়ানমার থেকে ছুটে আসেন লাখ লাখ রোহিঙ্গা।

আরাকান রাজ‍্যে সেই দেশের সেনাবাহিনীর তান্ডব লীলা থেকে বাঁচতে, ঘর বাড়ি, জায়গা জমি সহ সব কিছু ছেড়ে ঢল নেমে ছুটে আসতে থাকে বাংলাদেশের দিকে। প্রথমে এই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ডুকতে দেওয়ার ইচ্ছা না থাকা স্বত্বেও আন্তর্জাতিক চাপ এবং মানবিকতা দেখিয়ে এই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ডুকতে দেয় বাংলাদেশ সরকার।

যদি সেই মুহূর্তে এদের ডুকতে দেওয়া না হতো তাহলে আজ যে এগারো লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয়ীত অবস্থায় আছে তারা লাশ হয়ে সীমান্ত গণকবর হয়ে ইতিহাসের সবচাইতে কলঙ্ক অধ‍্যায় সৃষ্টির নমুনা দেখতে হতো বিশ্বের। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ তাদের আশ্রয় দিয়ে সারা বিশ্বের প্রশংসা পেলোও আজ এরাই বাংলাদেশের জন সবচেয়ে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব সম্প্রদায় শুধু প্রশংসায় করে গেছে বাংলাদেশের ; কিন্তু এই প্রশংসা দিয়ে দেশের সংকট কাটানো সম্ভব? অবশ‍্যই না। রোহিঙ্গাদের এই সমস্যা যে শুধু ২০১৭ সাল থেকে তা কিন্তু নয়; এই সমস্যা মূলত ১৯৯১ সালের শেষের দিক থেকে রোহিঙ্গা ধীরে ধীরে বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হতে থাকে।

সর্বশেষ ২০১৭ সালে এই রোহিঙ্গা সংখ্যা তীব্র থেকে তীব্র ধারন করে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি করছে বাংলাদেশের। এত সংখ্যক রোহিঙ্গা আশ্রয়ে হিমশিম খেতে হয়েছিলো বাংলাদেশের। রোহিঙ্গাদের এই ভয়াবহতা কাটানোর জন্য বাংলাদেশের উখিয়া এবং ভাসনচরে তাদের জন্য আশ্রয় প্রকল্প গড়ে তোলা হয়েছে।

এখানে তারা আরাম আয়েশ করে খাচ্ছে পরছে এবং স্বাভাবিক জীবন যাপনের ব‍্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু এত সুবিধা পেয়েও এই আশ্রয়ীত রোহিঙ্গারা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। আশেপাশের স্থানীয়দের সাথে সংঘর্ষের জড়িয়ে পরছে তারা। শুধু তাই নয় এরা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়ে দেশের ক্ষতি করারও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এদের মধ্যে কিছু অংশ আবার মাদক ব‍্যবসাও জড়িয়ে পড়ছে।

হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রায় ১২ লক্ষ রোহিঙ্গার সংখ‍্যা থাকলেও এখন তা প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি। এই সংকট মোকাবেলায় রোহিঙ্গা প্রত‍্যাবাসনের কোন বিকল্প নাই। প্রত‍্যাবাসনের জন্য দরকার আন্তর্জাতিক উদ্যোগ। রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ে বাংলাদেশ এতটা মানবিকতা দেখালেও চুপ রয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

এমতাবস্থায় এই সংকটের মধ্যে আবার নতুন করে সীমান্তে উত্তেজনার সৃষ্টি করে উসকানি দিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমার। যা নতুন আরেক চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে মিয়ানমার নতুন করে রোহিঙ্গাদের প্রবেশের জন্য বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য হয়তো এই উসকানি দিচ্ছে; কিন্তু এই উসকানির ফাদেঁ পা না দিয়ে কুটনৈতিক ভাবে সমাধান করার জন্য পরামর্শ তাদের।

সীমান্তে গোলাগুলি এবং অস্ত্রের ঝনঝনানির শব্দে আতঙ্কে সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের নাগরিকরা। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কে তলব করে কড়া হুশিয়ারি দেওয়ার পর দুদিন বন্ধ থাকলেও আবার মিয়ানমারের বিমান বাংলাদেশের আকাশে উড়তে দেখা যাচ্ছে। এমনকি বিজেপির গুলিতে একজন বাঙালি নিহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। যা মিয়ানমার পায়ে পারা দিয়ে ঝগড়া করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করছে।

মিয়ানমারের এই নীল নকশা বা অপকৌশলে পা না দিয়ে
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতার মাধ্যমে এই সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশের উদ্যোগ গ্রহন করা এখন জরুরি। অন‍্যথায় আগামীর বাংলাদেশ একটি ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে পড়তে হতে পারে। এমতাবস্থায় দলমত নির্বিশেষে রাজনৈতিক সকল ভেদাভেদ ভুলে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের পাশে দাঁড়ানো উচিত বলে মনে করছি।