বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীন ঐতিহ্যের সেই কুঁড়েঘর – Newsroom bd24.
ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীন ঐতিহ্যের সেই কুঁড়েঘর

নিউজরুম বিডি২৪
সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২ ৫:৩৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বিকাশ রায় বাবুল, নীলফামারী : আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ছিল কুঁড়েঘর । দাদা -দাদীদের মুখে শোনা যেত খড় ও ছনের ছাউনী দেয়া ঘরে থাকলে গরমের সময়ও শরীর ঠান্ডা থাকত । গ্রামীন মানুষের মাথা গোঁজার একমাত্র ঠাঁই ছিল এটি । যেখানে বাঁশের তৈরী খাটে ঘুমিয়ে কতই না স্বপ্ন দেখত গ্রাম বাংলার সহজ সরল খেটে খাওয়া মানুষ।

স্বপ্ন ছিলনা আকাশ ছোঁয়া। শুধুমাত্র আশা ছিল সারাদিন কাজের শেষে একটু প্রশান্তি। আর সেই প্রশান্তির আশায় ক্লান্ত শরীরে ফিরত সেই ছোট্ট কুঁড়েঘরে।

সেই ঘরে ছিলনা কোন দামী আসবাবপত্র। ছিল পাটের তৈরী শিকায় তোলা মাটির হাড়ি পাতিল যেখানে রাখা হতো বিভিন্ন ধরনের খাবার সামগ্রী । আর কাপড় -চোপড় রাখার জন্য ছিল একটি লম্বা রশি দিয়ে টাঙ্গানো বাঁশের লাঠি।

সেই সময় গ্রামাঞ্চলের মানুষজনের কল্পনাতীত ছিল রড, সিমেন্ট, বালু আর টিনের তৈরী পাকা ঘর। তবে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে বদলে গেছে গ্রামের সেই চিরচেনা রুপ।

কুড়েঘর ঘর তৈরীতে লাগত ছন বা খড়, পাটের তৈরী করা রশি ও বাঁশ। সময়ও লাগত ৩-৪ দিন। যারা ঘর তৈরী করত তাদের কে স্থানীয় ভাষায় বলা হতো ছকরবন (ঘরামী)। তাদের মজুরী ছিল দিন প্রতি প্রায় ২০-২৫ টাকা।

সবচেয়ে মজার বিষয় ছিল ঘরের চালা তুলতে লোক লাগত প্রায় ১৫-২০ জন। সেই সময় চালা তুলতে সবাই স্বেচ্ছাশ্রমে এগিয়ে আসত। সকল শ্রেণী পেশার মানুষের মধ্যে ছিল খুবই ভ্রাতৃত্ববাধ ও ঐক্যতা ।

নীলফামারী সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের বাসিন্দা ছকরবন (ঘরামী) ধনে রাম রায় (৭০) বলেন, ঘর তৈরীর জন্য আমরা ৪-৫ জনের একটি দল ছিলাম। প্রতিদিন কারো না কারো ঘর তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করতাম। কারো বাড়ীতে নিদিষ্ট দিনে না গেলে অনেকেই খুব মন খারাপও করত। তবে সেই দিনগুলোর কথা আজও আমার খুবই মনে পড়ে।

 

এ বিষয়ে কথা হলে কচুয়া চৌরঙ্গী সেবা স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক ননী গোপাল রায় নন্দ বলেন, কুঁড়েঘর গ্রামীন ঐতিহ্যের একটি অংশ । এটি আজ বিলুপ্ত প্রায় । এটি এখন আমার কাছে শুধুই স্মৃতি ।

   
%d bloggers like this: