নীলফামারী থেকে হারিয়ে যাচ্ছে মৌচাক   – Newsroom bd24.
ঢাকাশনিবার , ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

নীলফামারী থেকে হারিয়ে যাচ্ছে মৌচাক  

নিউজরুম বিডি২৪
সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২ ৮:২২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিকাশ রায় বাবুল, নীলফামারী : একসময়ে নীলফামারীর গ্রামীণ মেঠো পথে হাঁটলে রাস্তার ধারে গাছের উঁচু ডালে,পাকা ঘরের দেয়ালে,হরহামেশাই চোখে পড়তো মৌমাছির বাসস্থান মৌচাক।

মৌমাছিরা মধু সংগ্রহে ভোঁ ভোঁ করে আনাগোনা করতো। কিন্তু বড় বড় গাছ কেটে ফেলা, জঙ্গল উজাড় হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে মৌমাছির সেই অবাধ বিচরণ,মধু সংগ্রহকারীদের মধু সংগ্রহের দৃশ্য তেমন একটা দেখা যায় না। শোনা যায়না মৌমাছির ভোঁ ভোঁ শব্দ।

সামাজিক প্রাণি মৌমাছিরা মৌচাকে দলবদ্ধভাবে বসবাস করে। একটি মৌচাকে তিন শ্রেণির মৌমাছি থাকে, রানী, পুরুষ ও শ্রমিক মৌমাছি। রানী মৌমাছি বড় আর পুরুষ মৌমাছি মাঝারি এবং শ্রমিক মৌমাছি ছোট আকৃতির হয়।

রানী মৌমাছির তত্বাবধানে মৌচাকের যাবতীয় কাজ অন্যান্য মৌমাছিরা সম্পন্ন করে থাকে। প্রতিটি মৌমাছির কাজ নিজেদের মধ্যে বন্টন করে নেওয়ার মাঝে তাদের মধ্যে সামাজিকতা লক্ষ্য করা যায়।

শ্রমিক মৌমাছিরা বিভিন্ন ফুল ফল থেকে রস সংগ্রহ করে মৌচাকে জমা করে। আর সেই তরল রস মৌচাকে জমাট বেঁধে তৈরি হয় মধু।
একটা সময় অনেকেই মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করে চালিয়েছিলেন জীবন জীবিকা। তবে আগের মত মৌচাক না থাকায়,সেই পেশা ত্যাগ করে জীবিকার তাগিতে অনেকে বেছে নিচ্ছেন অন্য পেশা। মধু সংগ্রহের সেসব দৃশ্য যেন এখন শুধুই স্মৃতি।

আধুনিক যুগে যে হারে মানুষ গাছ পালা, বন জঙ্গল কেটে ধ্বংস করে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে প্রকৃতিকে করেছে কোনঠাসা। তেমনি নিয়ম না মেনেই তৈরি হচ্ছে অবকাঠামো। আর সেসব কারণে প্রাকৃতিক ভাবে এসে চাক তৈরী করা সামাজিক প্রাণি মৌমাছির জীবন রক্ষা করাই যেন সংকটাপন্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যার কারনে হারিয়ে যাচ্ছে মৌমাছির বাসস্থান মৌচাক।

আর্যুবেদিক ও ইউনানি শাস্ত্রে আছে, মধু সর্ব রোগের মহৌষধ। মধু মানুষের শক্তি,স্মৃতিশক্তি, হজমে সহায়তা, কোষ্ঠকাঠিন্য দুরীকরণ, রক্তশূণ্যতা নিরাময়ে, অনিদ্রা নিরসনে কাজ করে থাকে।

এ ব্যাপারে উপজেলার হরিনচড়া ইউনিয়ন হংসরাজ গ্রামের প্রবীন ব্যক্তি বাবু গলিরাম চন্দ্র রায় গকুল বলেন, আমার নিজ বাড়ির আমগাছ থেকে চাকের মধু পেড়ে খেয়ে ছিলাম গত পঞ্চাশ বৎসর পূর্বে। সেই মধু খাওয়ার স্বাদ মুখে এখনও লেগে আছে। এখন সেই মধু পাওয়া যায় না।

এ বিষয় কথা হলে নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, মৌমাছি সামাজিক প্রাণিটি কৃষকের চাষাবাদের পরম উপকারী বন্ধু। নানা মৌসুমে রবিশষ্য ও ফুল ফলজ চাষে পরাগায়ন ঘটাতে মৌমাছি ব্যপক ভূমিকা রাখে। তা ছাড়া সরিষা চাষাবাদের মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে যেন মধু চাষ করতে পারে সে বিষয়ে কৃষক কে নানা পরামর্শ দিয়ে আসছি।