ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায়কে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মেজর জিয়া ও আকরামকে ধরতে ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বিশিষ্ট পদার্থবিদ অধ্যাপক অজয় রায়ের ছেলে অভিজিৎ । বিজ্ঞানের নানা বিষয় নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি মুক্তমনা ব্লগ সাইট পরিচালনা করতেন তিনি। জঙ্গিদের হুমকির মুখেও ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে নিয়ে তিনি বইমেলায় অংশ নিতে দেশে এসেছিলেন।
২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে হামলার শিকার হন অভিজিৎ। জঙ্গিদের চাপাতির আঘাতে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন; তাঁর স্ত্রী বন্যার হাতের আঙুল কাটা পড়ে।সেই ঘটনা পুরো বাংলাদেশকে নাড়িয়ে দেয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় কর্তৃক ‘‘রিওয়ার্ডস ফর জাস্টিস’ শিরোনামে একটি পোস্টার ছাপানো হয়।এতে বলা হয়, বাংলাদেশে মার্কিন নাগরিকদের উপর সন্ত্রাসী হামলার তথ্যের জন্য ৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা। পোস্টারে বলা হয়, ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বইমেলা থেকে বেরিয়ে আসার সময় আল-কায়েদা ভিত্তিক সন্ত্রাসীরা মার্কিন নাগরিক অভিজিৎ রায়কে হত্যা এবং তার স্ত্রী রাফিদা বন্যা আহমেদকে আহত করে।
পোস্টারটিতে লেখা হয়, হামলার সাথে জড়িত কারো সম্পর্কে আপনার কাছে কোনো তথ্য থাকলে, নিচের নম্বরটি ব্যবহার করে সিগন্যাল, টেলিগ্রাম বা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আমাদের নিকট প্রেরণ করুন। সেক্ষেত্রে আপনিও পুরস্কার পেতে পারেন।’
মেজর জিয়া ও আকরামের বিষয়ে তথ্য দিতে ওই পোস্টারে একটি ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে। নম্বরটি হলো- +1-202-702-7843।এছাড়া @RFJ_USA নামে একটি টুইটার হ্যাণ্ডলও দেওয়া হয় তথ্য প্রদানের জন্য।
এতে আরও বলা হয়, ‘ওই হামলায় ভূমিকার জন্য বাংলাদেশের একটি আদালতে ছয়জনকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেওয়া হয়েছে। ওই আসামিদের মধ্যে দুজন- সৈয়দ জিয়াউল হক (মেজর জিয়া) ও আকরাম হোসেন-এর অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছিল এবং তারা এখনো পলাতক রয়েছেন।
পোস্টারের নিচে বাম দিকের কোণায় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের নাম ও প্রতীক, ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি সার্ভিস এবং রিওয়ার্ডস ফর জাস্টিসের নাম রয়েছে।
প্রথমে স্টেট ডিপার্টমেন্ট এই পোস্টার প্রকাশ করে। পরে রিওয়ার্ডস ফর জাস্টিস তাদের টুইটার অ্যাকাউন্টে এই পোস্টার আপলোড করে টুইট করে।
উল্লেখ্য, অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের ছয় বছরের মাথায় চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি হত্যার রায় দেন আদালত।রায়ে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর এবং আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সামরিক শাখার প্রধান জিয়াউল হক ওরফে জিয়াসহ ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত ছয় জনের মধ্যে জিয়া ও আকরাম শুরু থেকেই পলাতক আছেন।সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়া মেজর জিয়াকে ধরিয়ে দিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা রয়েছে।