আন্তর্জাতিক : তালেবানরা সেলুনগুলোতে নাপিতদের কারও দাড়ি কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে । আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তালেবান নেতাদের মতে , পুরুষদের দাড়ি কাটলে শরিয়াহ আইন লঙ্ঘন করা হয়।এছাড়াও কেউ এই নিয়ম ভঙ্গ করলে শাস্তি পেতে হবে বলে জানিয়েছে তালেবানের ধর্মীয় পুলিশ ।
কাবুলে কর্মরত কয়েক জন নাপিতও জানিয়েছেন তাদেরও একই ধরণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলীয় হেরাত প্রদেশের সেলুনগুলোতে টানিয়ে দেওয়া নোটিশে নাপিতদের সতর্ক করে বলা হয়েছে, চুল বা দাড়ি কাটার সময়ে শরিয়াহ আইন অনুসরণ করতে হবে। এতে আরও বলা হয়েছে, ‘এনিয়ে কারো অভিযোগ করার অধিকার নেই।’
কাবুলের এক নাপিত বলেন, ‘যোদ্ধারা প্রায়ই আসছে আর আমাদের দাড়ি কাটা বন্ধ করার আদেশ দিচ্ছে। তাদের একজন আমাকে বলেছে তারা আমাদের ধরতে ছদ্মবেশে আসতে পারে।’
কাবুলের অন্যতম বড় একটি সেলুনের এক কর্মী জানান তাকে সরকারি কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোন করা হয়েছে। সেখানে তাকে ‘আমেরিকান স্টাইলে’ চুল-দাড়ি কাটতে নিষেধ করা হয়েছে। আর কারোর দাঁড়ি ছাটা বা শেভ করতেও নিষেধ করা হয়েছে।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের প্রথম সরকারের আমলে আফগানিস্তানে নকশাদার চুল কাটা নিষিদ্ধ ছিল। আর পুরুষদের দাড়ি রাখতে উৎসাহিত করা হয়। তবে তালেবানের পতনের পর আফগানিস্তানে পুরুষের ক্লিন শেভ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে আর বহু আফগান পুরুষ সেলুনে গিয়ে নানা স্টাইলে চুল কাটিয়ে থাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নাপিত জানিয়েছেন, তালেবানের নতুন নিয়মের কারণে তাদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে। তিনি বলেন, ‘অনেক বছর ধরেই আমার সেলুনে অল্প বয়সীরা তাদের ইচ্ছামতো শেভ করে। এই ব্যবসা চালানোর কোনও উপায় নেই।’
আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘ফ্যাশন সেলুন ও নাপিতগিরি নিষিদ্ধ ব্যবসায় পরিণত হচ্ছে। গত ১৫ বছর ধরে এটাই আমার কাজ আর কখনো ভাবিনি এটা চালিয়ে যেতে পারবো না।’
একের পর এক কঠোরতার জন্য সমালোচনায় পড়ছে তালেবান শাসনব্যবস্থা।গত মাসে ক্ষমতা দখলের পর বিরোধীদের কঠোর সাজা দিয়েছে তালেবান। গত শনিবার হেরাত প্রদেশে অপহরণের অভিযোগে চার জনকে গুলি করে হত্যা করে এবং তাদের মরদেহ রাস্তায় ঝুলিয়ে রাখা হয়।
আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর তালেবান এবার উদার শাসন নীতির প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে নতুন এই নির্দেশনায় তাদের পূর্বের মেয়াদের মতো কঠোর শাসনের ইঙ্গিত দেখছেন অনেকেই।