জলবায়ু পরিবর্তনে বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ছয় প্রস্তাব – Newsroom bd24.
ঢাকামঙ্গলবার , ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১

জলবায়ু পরিবর্তনে বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ছয় প্রস্তাব

মামুন অর রশিদ (ডেস্ক নিউজ)
সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১ ১২:২৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

নিউইর্য়কঃ বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় বিশ্ব নেতাদের দ্রুত সাহসী ও অধিকতর শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস আহ্বানে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের  বৈঠকে এ আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে সৃষ্ট সংকট উত্তরণে বিশ্ব নেতাদের সামনে ৬টি প্রস্তাবও পেশ করেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব নেতাদের বলেন, পৃথিবীর জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় আমাদের জরুরিভাবে সাহসী এবং অধিকতর শক্তিশালী ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে প্যারিস চুক্তি কঠোর বাস্তবায়নের করার কথা বলেন।

উন্নত দেশগুলো থেকে বার্ষিক ১শ বিলিয়ন ডলার তহবিল আদায় করার কথা বলেন শেখ হাসিনা।
এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, এ টাকার ৫০ শতাংশ অভিযোজন এবং স্থিতিস্থাপকতার জন্য খরচ করা উচিত, বিশেষ করে জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য।

উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছে নতুন আর্থিক মেকানিজম এবং পরিবেশবান্ধব সবুজ প্রযুক্তি হস্তান্তর করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি ও ধ্বংস এবং এর কারণে বড় পরিসরে জনগণের বাস্তুচ্যুত হওয়ার সংকট মোকাবিলা করতে বলেন শেখ হাসিনা।

পঞ্চম প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামারি এবং দুযোর্গের দুই বিপদ মোকাবিলায়, বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তন দুর্যোগ বাড়ার সঙ্গে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) দেশগুলোর সক্ষমতা তৈরিতে সহায়তা প্রয়োজন।

আগামী প্রজন্মের জন্য টেকসই ভবিষ্যত রেখে যেতে সবাইকে বৈশ্বিক মনোভাব নিয়ে কাজ করার কথা বলেন শেখ হাসিনা।

বৈশ্বিক গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বৈশ্বিক গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণে সবচেয়ে কম ভূমিকা রাখছে জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো। যদিও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে তারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।

সাম্প্রতিক আইপিসিসি রিপোর্টে জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর ভবিষ্যত নিয়ে ভয়ানক চিত্র তুলে ধরার কথা উল্লেখ শেখ হাসিনা বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা যদি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বৃদ্ধি পায় তাহলে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো স্থায়ী ক্ষতির মুখে পড়বে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্বের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অভিযোজন এবং ক্ষতি প্রশমনে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে সহায়তা করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। সম্পদের সীমাবদ্ধতার সঙ্গে জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হওয়া সত্ত্বেও অভিযোজন ও স্থিতিস্থাপকতায় বাংলাদেশ বিশ্বে পথপ্রদর্শক বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

‘সবুজ প্রবৃদ্ধি’, অবকাঠামোগত স্থিতিস্থাপকতা এবং নবায়ন যোগ্য জ্বালানিকে গুরুত্ব দিয়ে ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ গ্রহণ করার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমরা জলবায়ু ভালনারাবলিটি থেকে জলবায়ু রেজিলেন্স, জলবায়ু রেজিলেন্স থেকে জলবায়ু সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

সিভিএফ এবং ভি২০ চেয়ার শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য ক্লাইমেট ভালনারেবল দেশগুলোর স্বার্থ অগ্রাধিকার দেওয়া। আমরা আমাদের প্র্যাকটিস এবং অভিযোজন জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা একে অন্যের সঙ্গে বিনিময় করছি। সর্বোপরি আমরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কেমন পৃথিবীর রেখে যেতে চাই এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্লানিং করে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে তাহলেই এই বিশ্বকে কিছুটা হলেও জলবায়ু ঝুঁকি মুক্ত করা সম্ভব হবে।

   
%d bloggers like this: