নড়াইলঃ জেলার কুখ্যাত সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবীতে প্রশাসনকে ৭ দিনের আল্টিমেটলি দিয়েছেন এলাকাবাসী।এলাকাবাসীর দাবি ,আসামি আটক না হলে এসপি অফিস ঘেরাও করা হবে ।
এসময় নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শওকত কবির,উত্তেজিত জনতার উদ্দেশে বলেন, পুলিশ কারোর দালালী করে না, আপনারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হউন।
আপনারা যেটাই করবেন পুলিশকে সাথে রেখে করবেন।আপনারা যদি জনসভার মধ্যে আসামিদের নাম বলতে ভয় পান,তাহলে আমাকে গোঁপনে বলবেন। আসামীদের আটক করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি ,আপনারা সন্ধান পেলে আমাদের জানাবেন, নড়াইল জেলা পুলিশের প্রতি ভরসা রাখুন। আসামীরা কোথাও গিয়ে বাঁচতে পারবে না বলে তিনি জানান।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে নামধারী কিছু কুখ্যাত সন্ত্রাসীদের কাছে নড়াইল সদরের শাহাবাদ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের নিরুহ মানুষ জিম্মি, প্রায় ৩ বছর যাবত সন্ত্রাসীরা এসব এলাকার নিরুহ মানুষের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবী করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকি দেয়।এলাকার নারীদের সম্ভ্রমহানীর চেষ্টাসহ নানা ধরণের নির্যাতনের স্বীকার হয়ে আসছে এলাকাবাসী।
এসব অত্যাচার নির্যাতন অসহনীয় পর্যায় যাওয়ায় এক সমাবেশের আয়োজন করে এলাকাবাসী। শনিবার ১৮ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টার দিকে নয়নপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ চত্বরে মানববন্ধন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও এলাকাবাসীর মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজনের খবর পেয়ে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন মাঠে উপস্থিত হয় এবং সমাবেশের পরিবর্তে এক শান্তি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সমাবেশে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কথা উল্লেখ্য করে দ্বীন মোহাম্মদ মিয়া বলেন, নড়াইল সদর থানায় গত ১৩সেপ্টেম্বর এবং ১৬সেপ্টেম্বর রাম প্রসাদ এজাহার করেন এবং দ্বীন মোহাম্মদ মিয়া জিডি করেন।
এ শান্তি সভায় সভাপতিত্ব করেন,এলাকার বিশিষ্ট সমাজ সেবক জাহাঙ্গীর ভুইয়া। এ সভায় স্থানীয় পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা,রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ,স্থানীয়জনপ্রতিনিধি, সামাজিক ব্যক্তিগনের সামনে অত্যাচার, নির্যাতনের ভয়াবহ কাহিনী তুলে বক্তব্য রাখেন ভুক্তভোগীরা।
এসময় বক্তব্য রাখেন,নড়াইল জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ কামরুজ্জামান,জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস,নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা,জেলা আওয়ামী-লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস,বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি নড়াইল জেলার সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, নড়াইল জেলা আওয়ামী-লীগের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট সমাজসেবক গোলাম মুর্ত্তজা স্বপন,
হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্যবদ্ধ পরিষদের সভাপতি আব্দুল হাই সিটি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মলয় কান্তি নন্দী,
নড়াইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)শওকত কবির,
নড়াইল জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট উত্তম কুমার ঘোষ,শাহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন পান্না,শাহাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক,অ্যাডভোকেট প্রিন্স,সাবেক জেলা ছাত্রলীগ নেতা মনিরুজ্জামান রোজ,রামপ্রসাদ, অর্জুন বিশ্বাস,কবিতা সিংহ,গৌরীবালা প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন এক সপ্তাহের ভিতর যদি এই কুখ্যাত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করা হয় তাহলে এসপি অফিস ঘেরাও করা হবে বলে হুশিয়ারী ব্যক্ত করেন এবং একই সাথে শাহাবাদ ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রাম ও মহল্লায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে সম্মিলিতভাবে কাজ করার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন।
নড়াইল জেলা প্রশাসন বলেন অত্র এলাকায় ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত আসামীদেরকে দ্রুত গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দেন।
উল্লেখ্য,নড়াইল পৌরসভার ভওয়াখালী গ্রামের মোস্তফা কামাল জুড়ুলিয়া গ্রামের হালিম কবিরাজ ও বিঞ্চুপুর গ্রামের বুলবুলকে হুকুম দিয়ে শাহাবাদ ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের রাম প্রসাদ সিংহের বাড়ি থেকে জোর করে তার (রাম প্রসাদ সিংহ) চেক বইয়ের একটি পাতা ছিনিয়ে নেয় এবং জোর করে স্বাক্ষর করিয়ে অগ্রণী ব্যাংক থেকে একলক্ষ টাকা তুলে নেন। পরে এই সংঘবদ্ধদল জোর করে রাম প্রসাদ সিংহের নামে ৩৫০ টাকার ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ক্রয় করে এবং ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন।
এ ঘটনায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর নড়াইল সদর থানায় অপহরণ, অবৈধ আটক, চাঁদাবাজীর মামলা করে রাম প্রসাদ সিংহ। মামলা নং-০১৬, ১৩/০৯/২০২১ইং,
অপরদিকে একই ইউনিয়নের বিঞ্চুপুর গ্রামের দ্বীন মোহাম্মদ মিয়াকে জুড়লিয়া গ্রামের হালিম কবিরাজ তার হাত-পা কেটে ফেলার হুমকি দেয়। হালিম কবিরাজ এর আগেও দ্বীন মোহাম্মদ মিয়ার মাছের ঘেরে থাকা লোকজনের ওপর নানা ধরণের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে আসছে।
এ ধরণের ঘটনায় দ্বীন মোহাম্মদ মিয়ার পরিবার ও এলাকার লোকজনের জান ও মালের ক্ষতির আশংকা করে সে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন,ডায়েরী নং-৬৪৭