গণভবনে আলোচনায় মাদারীপুরের রাজনীতি
করোনার কারণে প্রায় এক বছর পর দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে হয় এই সভা । সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হওয়া এ সভা বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চলে। সভায় দলের কার্যনির্বাহী সংসদের অর্ধশত নেতা উপস্থিত ছিলেন।
দলের নেতাকর্মীদের ওপর খবরদারি না করতে সংসদ সদস্যদের (এমপি) সতর্ক করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে এমপিদের বাড়াবাড়ি না করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
দলের ভেতরে গ্রুপিং বা উপদল তৈরি না করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান দলের প্রধান। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে তৃণমূল পর্যন্ত শক্তিশালী করতে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় বৃহস্পতিবার তিনি এসব নির্দেশনা দেন। সভায় দুই জেলার সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত হয়।
সভায় মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিমুখী কোন্দল নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়। ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, মাদারীপুরে অনেক কেন্দ্রীয় নেতার জেলা। এখানেই কোন্দল বেশি। নবগঠিত উপজেলা ডাসারে জেলা আওয়ামী লীগ একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে।
এ কমিটিতে স্থানীয় এমপি ও দলের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপের লোক না থাকায় তিনি নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছেন। দলীয় কোন্দল নিরসনে দলীয় প্রধানের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। এ সময় দলের প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ কোনো কমিটি দেননি বলে দলীয় প্রধানকে জানান।
সভায় শাজাহান খান বলেন, আমি মাদারীপুর সদরের এমপি, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। কিন্তু সদরে দলের বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। আমাকে দাওয়াত করা হয় না। এ সময় মাদারীপুরে দলের একজন নেতার স্মরণসভায় নাছিমকে প্রধান অতিথি করার কার্ড দলীয় সভাপতিকে দেখান তিনি। একইসঙ্গে জেলা ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনে তাকে ডাক দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ করেন।
উত্তরে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, শাজাহান সব চান। নিজের ছেলেকে ছাত্রলীগের সভাপতি বানাতে চান। স্ত্রীকে মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বানাতে চান। অন্য সহযোগী সংগঠনের নেতৃত্বে আত্মীয়স্বজনকে চান। উনি আওয়ামী লীগকে পারিবারিক লীগ বানাতে চান।
কেন্দ্রীয় নেতাদের এমন বাহাস শুনে দলের সভাপতি শাজাহান খানকে উদ্দেশে করে বলেন, আপনি মুরব্বি। সবাইকে নিয়ে দলটা করবেন। আপনার রাজপথে অনেক অবদান রয়েছে। আমাদের দুঃসময়ে ছিলেন। নৌকা নিয়ে ৫ বার এমপি হয়েছেন। আপনি কেন ভাগ চাইবেন? সব আপনারই হবে।
আপনার করে নিতে হবে। আপনি যদি নাছিম, গোলাপসহ সবাইকে ডাকেন, কেউ আপনাকে ফেলে চলে যেতে পারবে?
পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিরসন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে করণীয়, নির্বাচনকে সামনে রেখে অপপ্রচার মোকাবিলা, নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির লক্ষ্যে সভা-সেমিনারের মাধ্যমে প্রস্তাব নেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।