সিলেট-৩ আসনের উপ-নির্বাচন রাত পোহালেই ভোটগ্রহণ লড়ছেন ৪ প্রার্থী, ভোটার সংখ্যা ৩লাখ ৫২ হাজার
রাত পোহালেই সিলেট-৩ আসনের উপ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ, লড়ছেন ৪ প্রার্থী কাল শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সিলেট-৩ আসনের উপ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ভোটের মাঠে শেষ উত্তাপ ছড়িয়ে গেছেন নির্বাচনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতারা নিজ নিজ দলের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়ে প্রচারণার সমাপ্তি টেনেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়া উদ্দিন বাবলু। প্রচারযুদ্ধের পর এবার চলছে ভোটের হিসেব-নিকেষ। শেষ সময়ে এসে নির্বাচনে ‘ফ্যাক্টর’ হয়ে দাঁড়িয়েছেন ‘নিরব ভোটাররা।
প্রায় দুই মাসের প্রচারণা থেমেছে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-৩ আসনে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫২ হাজার। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক, বিএনপি থেকে বহিস্কৃত ও সাবেক সাংসদ শফি আহমেদ চৌধুরী এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের জুনায়েদ মোহাম্মদ মিয়া। প্রতীক বরাদ্দের পর গতকাল পর্যন্ত দুই মাস ৮ দিন প্রার্থীরা এলাকা চষে বেড়িয়েছেন। লকডাউনের মধ্যে প্রচারণায় নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ওই সময়েও নানা কৌশলে তারা চালিয়ে গেছেন প্রচারণা।
কিন্তু দীর্ঘ এই সময়ের মধ্যেও সাধারণ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ তৈরি করতে পারেননি প্রার্থীরা সূত্র জানায়, আসনটির অন্তত ৬০ ভাগ ভোটার এখন পর্যন্ত কোন প্রার্থীকেই প্রকাশ্যে সমর্থন জানাননি। শেষ পর্যন্ত তারা ভোট দিতে যাবেন কি-না তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। ‘মুখবন্ধ’ এসব ভোটার নিয়ে প্রার্থীরাও রয়েছেন মহাটেনশনে।
ভোট দিতে গেলে তারা কাকে দেবেন- এ নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই। সকল প্রার্থীই সাধারণ ভোটাররা নিজেদের পক্ষে রয়েছেন দাবি করলেও ভেতরে ভেতরে নিরব ভোটারদের নিয়ে টেনশন কাটছে না তাদের নিরব ভোটার’রা ভোট বিপ্লব ঘটাতে পারেন এমন আশঙ্কায় রয়েছেন প্রার্থীরা।
তবে রাজনীতি সচেতন মহলের ধারণা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনকে ঘিরে নিরব থাকা এসব ভোটার ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ারই সম্ভাবনা বেশি। আর নিরব ভোটারের যে অংশ ভোট কেন্দ্রে যাবে তাদের বেশিরভাগই দলীয় প্রতীকের চেয়ে প্রার্থীর যোগ্যতা ও এলাকার উন্নয়নের বিষয়টিই বিবেচনায় রাখবে।
সবমিলিয়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের বেশি ভোট কাস্ট না হওয়ার সম্ভাবনাই দেখছেন সচেতন মহল এদিকে, শুরুতে স্থানীয় নেতাদের উপর ভর করে প্রচারণা চালিয়ে যান জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক কিন্তু শেষমেশ তার পক্ষে মাঠে নামেন কেন্দ্রীয় মহাসচিব জিয়া উদ্দিন বাবলু গত ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি সিলেট এসে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সকাল পর্যন্ত টানা চারদিন প্রচারণায় অংশ নেন।
এরশাদের দ্বিতীয় বাড়ি সিলেট উল্লেখ করে সাধারণ ভোটারদের কাছে লাঙ্গল প্রতীকের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন তিনি। বিভিন্ন স্থানে তার আবেগঘন বক্তব্য ভোটারদের মনে নাড়া দেয়। এদিকে, দলীয়ভাবে বিএনপি অংশ না নিলেও সিলেট-৩ আসনের উপ নির্বাচনকে ঘিরে শুরু থেকেই উত্তাপের কমতি ছিল না। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতাদের অংশগ্রহণ নির্বাচনী প্রচারণায় নতুন মাত্রা যোগ করে।
হাবিবুর রহমান হাবিবের পক্ষে প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের প্রায় দুই ডজন নেতা ব্যাপক প্রচারণা চালান।
দ্বিতীয় দফায় গত বুধবার সিলেট আসেন জাহাঙ্গীর কবীর নানক গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত তিনি নৌকা প্রতীকের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেন
এদিকে, দল থেকে বহিস্কার হওয়ায় কোন নেতা সাথে না থাকলেও থেমে থাকেননি শফি আহমেদ চৌধুরী। বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের কর্মী ও সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে তিনি চালিয়ে গেছেন প্রচারণা অপরদিকে নির্বাচন ঘিরে ভোটের দিন ও পূর্বাপর সবধরণের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনারোধে শক্ত পদক্ষেপ নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন কমিশন।
আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সাল কাদির জানান, বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাগণের সমন্বয়ে ২ সদস্যবিশিষ্টি একটি ‘নির্বাচনী তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া আসনটির ভোটগ্রহণ উপলক্ষে ৩ জন ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োগ দিয়েছে ইসি। তাঁরা নির্বাচনের আগে দুইদিন, পরের দুইদিন ও নির্বাচনের দিন অর্থাৎ ২ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন।