তিন উপজেলায় তিন দিন চলবে না মোটরসাইকেল
সিলেট-৩ আসনের উপ নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করতে ইতোমধ্যে সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে সিলটের তিন উপজেলা দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জে মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২ পর্যন্ত এ নির্দেশ জারি থাকবে।
সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন তিনি জানান, শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা থেকে রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রোবাস, কার ও জিপ চলাচল বন্ধ থাকবে।
তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে প্রার্থী, তাদের নির্বাচনী এজেন্ট দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম শিথিল থাকবে। এছাড়া অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং গণমাধ্যমের কাজে ব্যবহৃত যানবাহনের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা থাকবে না বলে জানানো হয়। আজ শুক্রবার বিকেলে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)সহ নির্বাচনী সকল সরঞ্জাম প্রতি কেন্দ্রে পৌঁছানো হবে বলেও জানান ফয়সল কাদের তিনি আরও জানান, উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই মাঠে নেমেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ভোটের পর রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবেন।
সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদের বলেন, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ- এই ৩ উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-৩ আসনের নির্বাচনকালীন সময়ে সকল অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ২ সদস্যবিশিষ্টি একটি ‘নির্বাচনী তদন্ত কমিটি’ গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন।
কমিটিতে রয়েছেন সিলেটের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ তাসলিমা শারমিন ও সিনিয়র সহকারী জজ নির্জন কুমার মিত্র এছাড়া আসনটির ভোটগ্রহণ উপলক্ষে ৩ জন ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োগ দিয়েছে ইসি। এর মধ্যে সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুর রজমান ভূঁঞাকে দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় অঞ্জন কান্তি দাসকে বালাগঞ্জ উপজেলায় এবং সিলেটের মেট্রোপলিট্রন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুমন ভূঁইয়াকে ফেঞ্জুগঞ্জ উপজেলায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাঁরা নির্বাচনের আগে দুইদিন, পরে দুইদিন ও নির্বাচনের দিন- অর্থাৎ ২ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট পাঁচদিন নির্বাচনী মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন।
ফয়সল কাদের জানান, ভোটগ্রহণের দিন কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা। ৪ সেপ্টেম্বর সাধারণ ভোটকেন্দ্রে থাকবে পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশের ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য। আর ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে নিয়োজিত থাকবে ১৮ থেকে ১৯ জন সদস্য। এদের মধ্যে পুলিশ আর আনসার সদস্যের কাছে অস্ত্র থাকবে। তারা সার্বক্ষণিক ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা দেবেন পুলিশ এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন
আনসারের সমন্বয়ে গঠিত মোবাইল ফোর্স ২১টি, স্ট্রাইকিং ফোর্স ১২টি, র্যাবের ১২টি টিম ও ১২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে আগামী ২ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বিজিবির সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা মোকাবিলায়।
ভোটগ্রহণের দিন নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিতকরণ ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত রাখা হবে ২১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। অন্যদিকে রিটার্নিং অফিসার ও প্রিজাইডিং অফিসারের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রের অভ্যন্তরে কিংবা ভোট গণনা কক্ষের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে দায়িত্ব পালন করবে।
এছাড়া নির্বাচন কার্যালয়সমূহ রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের নিরাপত্তা বিধান করা, স্থানীয় জননিরাপত্তা, কেন্দ্রে ভোটারদের সুশৃঙ্খল লাইন করানোসহ স্থানীয় শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ, সংশ্লিষ্ট এলাকার কেন্দ্রসমূহের ইভিএম ও ইভিমের কারিগরি সহায়তায় নিয়োজিতও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে পুলিশ আবার ভোটারদের জন্য আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করাও এ বাহিনীর দায়িত্ব।