- অবশেষে সপ্তাহ জুড়ে চলা দ্বন্দ্ব-সংঘাতের অবসান ঘটল বরিশালে। দিবাদমান দুই গ্রুপের মাঝে সমঝোতা বৈঠকের মাধ্যমেই এর অবসান ঘটল।
রোববার রাতে বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল আহসান বাদলের বাসভবনে অনুষ্ঠিত দীর্ঘ বৈঠকের পর সমঝোতায় আসে দুই পক্ষ। যদিও প্রশাসনের কেউ এ ব্যাপারে মুখ খোলেননি গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে।
তবে বৈঠক সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে সমঝোতার বিষয়টি।
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতিও বিষয়টি স্বীকার করেছেন সংবাদকর্মীদের কাছে।
রাত ১টার পর বরিশাল সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ দপ্তর থেকেও এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে দু’পক্ষের সমঝোতার খবর। তাছাড়া বৈঠক শেষে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহসহ পুলিশ বিভাগ এবং প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তোলা একটি গ্রুপ ছবি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেখানে বরিশাল সদর উপজেলার ইউএনও মুনিবুর রহমানের উপস্থিতিও রয়েছে।
বরিশালে প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে বিরাজমান দ্বন্দ্ব নিরসনে ভেতরে ভেতরে যে একটা চেষ্টা চলছে তার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল রোববার দুপুরেই। সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রথম সেই ইঙ্গিত দেন। সে সময় তিনি বলেন, এটা একটা ভুল বোঝাবুঝি এবং খুব শিগগিরই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
এদিকে বরিশালে ইউএনও এবং কোতয়ালী থানার ওসিসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক দুটি মামলার আবেদন জমা পড়লেও সেগুলো এজাহার হিসেবে গ্রহণ না করে তদন্তের জন্য পিবিআইয়ের কাছে পাঠিয়ে দেন বিচারক। সিটি মেয়রের পক্ষে চলমান আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার বরিশালে বিসিসি কাউন্সিলরদের যে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছিল তাও স্থগিতের ঘোষণা আসে রোববার রাতে। সবমিলিয়ে ভেতরে ভেতরে যে কিছু একটা হচ্ছে- তা আঁচ করতে পারছিল সবাই। সেই সঙ্গে চলছিল গণমাধ্যম কর্মীদের অনুসন্ধান কার্যক্রম।
রোববার রাত ১০টার পর বিভাগীয় কমিশনারের বাসভবনে একে একে প্রবেশ করতে থাকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের গাড়ি। রাত ১২টার পরে গাড়িগুলো আবার বেড়িয়ে আসে। এরইমধ্যে জানাজানি হয় ওই বাসভবনে মেয়রসহ সব কর্মকর্তাদের আপ্যায়িত হওয়ার বিষয়টি। একইসঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে বিরাজমান দ্বন্দ্ব দূর করে দুপক্ষের সমঝোতার খবর।
রাত ১২টা নাগাদ একটি ছবিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেখানে দেখা যায়, একই সারিতে হাস্যোজ্বল দাঁড়িয়ে আছেন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ এবং বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান। যে দু’জনের মধ্যে বিরোধের কারণেই গত ১৮ আগস্ট থেকে অগ্নিগর্ভ হয়ে ছিল বরিশাল।একইসঙ্গে সারা দেশে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রশাসনের সংঘাত।
এক সারিতে দাঁড়িয়ে তোলা ওই ছবিতে আরও রয়েছেন- বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি তালুকদার মো. ইউনুস, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর, বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল আহসান বাদল, রেঞ্জ ডিআইজি আকতারুজ্জামান, পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান এবং জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিনসহ আরও বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ব্যানার অপসারণ কেন্দ্র করে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ। এতে গোলাগুলির ঘটনা পর্যন্ত ঘটে। আজ বিবাদমান দুই পক্ষের সমঝোতার মাধ্যমে এর অবসান হলো বলে জানা যায়।