- বরিশাল বিভাগের সকল পৌর মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যানদের উদ্দ্যোগে আয়োজিত বরিশাল সিটিকর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এর উপর গুলি বর্ষন ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ’র ওপর গুলি বর্ষণ ও মামলা দায়েরের প্রতিবাদ এবং নিন্দা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বরিশাল বিভাগের সকল পৌর মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যনেরা।
শনিবার বিকাল ৩টায় নগরীর বরিশাল ক্লাবের হল রুমে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এসময় নেতৃবৃন্দ ১৮ই আগস্ট রাতের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের পাশাপাশি মামলা প্রত্যাহারসহ সকল নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানান।
অন্যথায় শোকাবহ আগস্ট মাসের শেষে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুশিয়ারী দিয়েছেন পৌর মেয়রগণ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গৌরনদী পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হারিছুর রহমান হারিছ।
তিনি বলেন, ‘গত ১৮ আগস্ট রাত সাড়ে ৮টায় বরিশাল সদর উপজেলা কমপ্লেক্সে নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের কাজে বাধা প্রদান ও গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মেয়র সেরনিয়াবাত সাকি আবদুল্লাহ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
‘মেয়র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলোচনার উদ্দেশ্যে উপজেলা কমপ্লেক্সের মূলগেট অতিক্রমকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে তাঁর নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরা মেয়র সাদিক আবদুল্লাহকে লক্ষ্য করে গুলি করে।
তাৎক্ষনিক সেখানে উপস্থিত দলীয় নেতাকর্মীরা মানব প্রাচীর রচনা করে মেয়রকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে তাঁর বাসভবনে পাঠিয়ে দেন। তিনি আরো করেন, ‘মেয়র সাদিক আবদুল্লাহকে গুলি করার খবর মুহুর্তে নগরব্যাপী ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীরা উপজেলা পরিষরে গেটের সামনে জড়ো হয়।
তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে পুনরায় অবিরাম গুলি বর্ষণ করতে থাকে। এতে গুলিবিদ্ধ হয় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র-২ ও বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন, মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস সহ আরো ৬০-৭০ জন আহত হয়।
আহতরা চিকিৎসার জন্য শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার প্রাক্কালে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রায় ২০০ দাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বেধড়ক লাঠিচার্জ শুরু করে। ফলে আরও প্রায় ৫০ জনের মত নেতাকর্মী মারাত্মকভাবে জখম হয়।
পৌর মেয়র হারিছুর রহমান হারিছ বলেন, ‘আমরা বিস্মিত হয়ে যাই যে, বরিশাল পুলিশ এবং স্বেচ্ছাচারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ ১৯ আগস্ট কোতয়ালী মডেল থানায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ কে ১ নম্বর আসামি করে ২টি মামলা দায়ের করে। যা দক্ষিণাঞ্চলবাসীর জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।
শোকাবহ আগস্টের ভাবগাম্ভীর্যতা ও মর্যাদা রক্ষায় আমরা এই নিন্দনীয় ঘটনার কোন প্রতিবাদ, বিক্ষোভে যেতে পারছি না। কিন্তু আমরা আজকের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আমরা দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে করা ২টি মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। স্বেচ্ছাচারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অপসারণ করতে হবে এবং আমরা এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় শোকাবহ আগস্ট শেষে আমরা আমারে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবো।
অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল জেলার ৬টিসহ বিভাগের ২৬টি পৌরসভার মেয়রগণ উপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া পৌর মেয়রদের পর পরই একই স্থানে একই বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বরিশাল বিভাগের উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা।
এসময় ৪২টি উপজেলার সকল উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানগণ উপস্থিত ছিলেন। তারাও একইভাবে মামলা প্রত্যাহারসহ ১৮ই আগস্ট রাতে মেয়রসহ আওয়ামী লীগের লীয় নেতাকর্মী এবং সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরে ওপর গুলি বর্ষণের ঘটনায় বিভাগীয় তদন্তসহ প্রকৃত দোষিদের বিচার দাবি করেন।
নিউজরুম বিডি২৪।