পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানীর যথাযথ অনুমোদন না নিয়ে কোম্পানীর গাড়ী নিয়ে দূর্ঘটনায় পড়েছেন এক কর্মকর্তা। তবে দূর্ঘটনা কবলিত গাড়িটির দায় নিতে চাইছে না কেউই। আর গাড়ি নিয়ে বিপাকে পড়েছে গাড়ি চালক।
পিজিসিএল সূত্রে জানা যায়, কোম্পানীর সিভিল ইঞ্জিনয়িারিংয়ের ডিজিএম প্রকৌশলী মো: রফিকুল ইসলাম তার এক আত্মীয় মারা যাবার কারনে ৩০ জুলাই রাত ১০টা ৫০মিনিটে নলকা প্রধান কার্যালয় থেকে ঠাকুরগাঁও যাবার জন্য একটি গাড়ি ব্যবহারের অনুমতির আবেদন করেন।
কিন্তু অনুমোদনের আগেই তিনি গাড়ীর চালককে জোরপূর্বক গাড়িটি নিয়ে রাজশাহীতে তার বাসভবনে যাবার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। গাড়ীর চালক তার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যার্থ হলে রফিকুল ইসলাম গাড়ী চালকের ম্যাসেঞ্জারে অনুমতি চাইবার কাগজটি পাঠিয়ে দিয়ে তাকে রাজশাহী যেতে বলেন।
অভিযোগ রয়েছে করোনাকালীন সময়ে কর্মকর্তাদের নিজ কর্মস্থল ত্যাগের অনুমতি না থাকলেও তিনি প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত রাজশাহী থাকতেন। আর রোববার সকালে তিনি অফিসে আসতেন। তবে এ বিষয়ে রফিকুল ইসলামের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
গাড়ি চালক মো: ওয়াসিম জানান, অনুমোদন সঠিকভাবে নিয়েছেন কিনা তা তিনি জানেন না। তবে স্যারের চাপের মুখে তিনি সিরাজগঞ্জের নলকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা হন। রাজশাহী থেকে উনার পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথিমধ্যে নওগা ধামুরহাটে যান্ত্রিক ত্রুটি হলে গাড়িটি দূর্ঘটনায় পড়ে সামনের অংশ বিধ্বস্ত হয়। পরে অন্য একটি ভাড়ার গাড়িতে উনাদেরকে ঠাকুরগাঁও পাঠানো হয়।
গাড়িটি এখন তিনি কি করবেন সে বিষয়ে কেউ কোন সিদ্ধান্ত না দেয়ায় তিনি এখন বিপাকে পড়েছেন।
যদিও নথিতে দেখা যায় পিজিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ৩১ জুলাই সকাল পৌনে ছটায় নোটে কোম্পানীর নীতিমালার ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উপস্থাপনের জন্য বলেছেন। কিন্তু অনুমোদনের আগেই ডিজিএম রফিকুল ইসলাম গাড়িটি ঠাকুরগাঁওয়ে যাবার অনুমতি চেয়ে আবেদন করলেও প্রথমে রাজশাহী নিয়ে যান। পরে ঠাকুরগাঁওয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন। একই সাথে সিরাজগঞ্জ থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের দূরত্ব ৪০০ কিলোমিটার হলেও নথিতে তা ৬৫০ কিলোমিটার দেখানো হয়েছে। একই সাথে ৭০ লিটার তেলের আবেদনও করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের জিএম(চলতি) ফজলে আলম জানান, গাড়িটি অনুমোদন নিয়েই বের হয়েছে। তবে নথিতে কোথাও মোখিক অনুমোদন বা পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন নেই কেন, সে বিষয়ে তিনি নিশ্চুপ থেকেছেন। একই সাথে ৩০ জুলাই রাত ১০টা ৫০ মিনিটে গাড়ি ব্যবহারের অনুমিত চেয়ে আবেদন করেই একই দিন রাত সাড়ে ১১টায় কোম্পানীর গাড়ি নিয়ে বের হয়ে যাওয়া কতোটা যৌক্তিক সে বিষয়েও তিনি কোন কথা বলেননি।
দীর্ঘদিন ধরেই পিজিসিএলের অনেক কর্মকর্তাই কোম্পানীর আইন ভঙ্গ করে নিজ প্রয়োজনে গাড়ি সহ অন্যান্য সুবিধা ভোগ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।