লকডাউনে ব্যাংকের দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় চাঁদপুরে এক ব্যাংকারকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
ব্যাংকারের নাম জাহাঙ্গীর আলম। তিনি ইসলামী ব্যাংকের চাঁদপুর শাখার মাঠ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, গত সোমবার দুপুরে শহরের ছায়াবাণী মোড় এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়। দণ্ডবিধির ২৬৯ ধারায় তাকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
তিনি পরিচয়পত্র দেখিয়েছেন এবং অফিসের দায়িত্ব পালনের কথাও জানিয়েছেন জরিমানার আদেশ দেয়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে। তবে ম্যাজিস্ট্রেট সেসব মানেননি।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. মেশকাতুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে লকডাউন এবং জুলাই থেকে শুরু হওয়া শাটডাউনে জরুরি সেবা চালু আছে। এর মধ্যে আছে ব্যাংকও। ব্যাংকারদের লকডাউনে চলাচলে বিধিনিষেধের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।
তবে দেশের বেশ কিছু এলাকায় ব্যাংকারদের পুলিশের জরিমানা এমনকি মারধরের ঘটনা ঘটেছে। গত এপ্রিলে একইভাবে একাধিক চিকিৎসককে হয়রানি করেছিল পুলিশ। তীব্র সমালোচনার পর এবার শাটডাউনে চিকিৎসকদের সঙ্গে আর কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় পুলিশের নাম আসেনি।
কাজী মো. মেশকাতুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ব্যাংক কার্যক্রম চালু রাখার কথা বলা হয়েছে। তবে ফিল্ডে কাজ করার বিষয়টা বলা নেই। তা ছাড়া তিনি আমাদের ফিল্ডে কাজ করার অনুমতির কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।’
ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় যুক্তি , ওই ব্যাংকার মোটরসাইকেল ব্যবহার করেছেন। কিন্তু এই বাহন ব্যবহারের অনুমতি আছে এ রকমও কোনো কাগজপত্র তিনি দেখাতে পারেননি। তাই লকডাউন অমান্য করায় তাকে জরিমানা করা হয়েছে।
তবে, ব্যাংকে কাজ করা ফিল্ড অফিসারদের কখনও আলাদা কোনো কাগজ দেয়া হয় না।
এবং শাটডাউনে যাদের যাতায়াতের অনুমতি দেয়া হয়েছে, তাদের বাহনের কোনো আলাদা কাগজ লাগবে, এমন কোনো আদেশ প্রশাসন, পুলিশ বা অন্য কোনো সংস্থা থেকে আসেনি।
এর আগে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের গোপালদী শাখার কর্মী আবু সালেহ মোহাম্মদ মুসাকে মারধর আর ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে সমালোচনার মুখে জরিমানা প্রত্যাহার করা হয়।
একই রকম ঘটনা ঘটেছে বরগুনায়। মাসুম বিল্লাহ নামে একজন ব্যাংকার তার বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপা থেকে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় কর্মস্থলে যাওয়ার সময় ট্রাফিক পুলিশ তাকে আটকে ২০০ টাকা জরিমানা করে।
মাসুম বিল্লাহ তাকে জরিমানার রসিদ ফেসবুকে পোস্ট করে লেখেন, ‘ব্যাংক খোলা রাখল আবার ব্যাংকারের কাছে জরিমানাও নিল। বুঝলাম না কী আইন দেশে চলতেছে।’
তার পরেও এই কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যাংকারদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়েছে। ব্যাংকারদের নানা ফেসবুক গ্রুপে এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা চলছে।
এই ঘটনার পর মঙ্গলবার ব্যাংকাররা বেলা ১১টা থেকে ৫ মিনিটের জন্য কর্মবিরতিও পালন করেন।
নিয়ম অনুযায়ী, জরুরি সেবায় নিয়োজিত রা প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র দেখিয়ে যাতায়াত করতে পারবেন।’
অর্থাৎ ব্যাংকারদের বাইরে যাতায়াতের জন্য কেবল পরিচয়পত্র দেখানোই যথেষ্ট, তবে সেটা মানেননি চাঁদপুরের ম্যাজিস্ট্রেট।
নিউজরুম বিডি২৪।