আমার মেয়ে সন্তান হয় যেন আত্মপ্রত্যয়ী।
আপনার মেয়েটিই আগামী দিনের নারী, মা। তাই মেয়েদের আত্মপ্রত্যায়ী হয়ে বেড়ে ওঠাটা খুব জরুরি। এজন্য প্রয়োজন শৈশব থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ। আর সেই দায়িত্ব নিতে হবে আপনাকেই।
প্রথমেই আপনাকে যে কাজটা করতে হবে তা হলো জেন্ডারভিত্তিক ভূমিকাগুলো মেয়ে সন্তানের ওপর চাপানো যাবে না। কারণ এ ব্যাপারটা আপনার মেয়ে সন্তানকে আত্মপ্রত্যায়ী হতে বাধা প্রদান করে। তাই প্রথমেই এটা থেকে বের হতে হবে।
সৌন্দর্য সবকিছু নয়
——————————
আপনার মেয়ে দেখতে সুন্দরী কিনা তা নিয়ে না ভেবে তার বিভিন্ন গুণ নিয়ে প্রশংসা করুন। আত্মীয়স্বজনদেরও সৌন্দর্য নিয়ে প্রশংসা না করে অন্য গুণগুলো নিয়ে প্রশংসা করতে বলুন। মেয়েকে “পুতুলের মতো”, “পরীর মতো” প্রভৃতি অ্যাখ্যা না দিয়ে তাকে বুদ্ধিমান, বন্ধুবৎসল, গোছানো প্রভৃতি প্রশংসা করুন। শিশুমনোবিদরা বলেন, ছেলে শিশুদের ক্ষেত্রে প্রশংসা করতে যেসব ইতিবাচক ভাষা ব্যবহার করা হয়, মেয়েদের ক্ষেত্রেও একই ধরনের ইতিবাচক ভাষা ব্যবহার করা উচিত।
স্বাধীনতা দিন
———————
মেয়ে সন্তানের অতিরিক্ত নিরাপত্তা দিতে গিয়ে তার স্বাধীনতা কেড়ে নেবেন না। মেয়ে ও ছেলের জন্য পরিবারে আলাদা নিয়ম চালু করবেন না। মনে রাখতে হবে, ছেলেরা যেসব কাজ করতে পারে মেয়েরাও সেসব কাজ করতে পারে, সেটা বাড়িতেই হোক অথবা বিদ্যালয়ে। ছেলেমেয়ে শিশুদের একই ধরনের খেলাধুলা, একই ধরনের শখের কাজ করার সমান সুযোগ তৈরি করুন।
ভালো বই পড়তে দিন
——————————-
বইপড়া একটি ভালো অভ্যাস। তবে আপনার মেয়েটি কেমন বই পড়ছে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাদের এমন সব বই পড়তে দিন যেগুলোর ভাষা শুধু মেয়েদের জেন্ডার ভূমিকাগুলো তুলে ধরার উদ্দেশ্যেই লেখা হয়েছে এমন না হয়। যেসব বইয়ে মেয়েদের ছেলেদের মতো সাহসী, বুদ্ধিমান, শক্তিধর, স্থিতধীসম্পন্ন ভূমিকায় দেখানো হয়েছে সসব বই পড়তে দিন।
আপনি আদর্শ হয়ে উঠুন
———————————–
নিজের মেয়ে সন্তানটির কাছে নিজে একজন আদর্শ হয়ে উঠুন। মেয়েরা কী করতে পারে অথবা পারে না, কেন পারে না এসব বিষয়ে নিজের ভাবনাগুলোকে প্রশ্ন করুন। আপনার নিজের মধ্যে জেন্ডারভিত্তিক কোনো বদ্ধমূল ধারণা থাকলে তা থেকে বেরিয়ে আসুন।
নিজে যেভাবে এসব বাঁধা অতিক্রম করেছেন তা আপনার মেয়েকে শেখান। আপনি তার কাছের বন্ধু হয়ে উঠুন। তাহলে সে খুব সহজেই আপনার সঙ্গে মিশতে পারবে। সবকিছু শেয়ার করতে পারবে। এজন্য সবার আগে আপনাকে আপনার মেয়ের কাছে একজন আদর্শবান মানুষ হয়ে উঠতে হবে।
প্রত্যেক শিশুকে নিজের সন্তান মনে করে তাঁদের মধ্যে স্বপ্নের বীজ বুনে দিতে হবে। তাঁদেরকে স্বপ্ন দেখাতে হবে,তবে তা অলীক নয়,বাস্তবসম্মত ভালো মানুষ হওয়ার। দেহে দু`টি হাতের যেমন আবশ্যকতা রয়েছে,তেমনি ছেলের পাশাপাশি মেয়েরও রয়েছে তাঁর নিজস্ব স্বপ্ন বাস্তবায়নের স্বাধীনতা এবং অধিকার। তাই, আসুন শিশুদের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলি।
নিউজরুম বিডি২৪।