প্রখ্যাত সাংবাদিক সায়মন ড্রিং আর নেই।
সায়মন ড্রিং একজন বিশ্ব বিখ্যাত সংবাদিক, টেলিভিশন উপস্থাপক এবং অনুষ্ঠান নির্মাতা ছিলেন। তিনি ১৯৪৫ সালের ১১ ই জানুয়ারি ইংল্যান্ডের ফাকেনহামের নরফোক শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বরেণ্য এই সাংবাদিক তাঁর কর্মসূত্রে বিশ্ব বিখ্যাত সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের বৈদেশিক প্রতিনিধি, লন্ডন ভিত্তিক দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ, বিবিসি টেলিভিশন এবং রেডিও সংবাদে সংযুক্ত ছিলেন।
মাত্র ১৭ বছর বয়সে ১৯৬৩ সালে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক ওয়ার্ল্ড সংবাদপত্রে সম্পাদনা সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৪ সালে নিউইয়র্ক টাইমসের স্ট্রিংগার হিসেবে কাজ করেন লাওস থেকে। একই বছরে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের যুদ্ধবিষয়ক সংবাদ প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। এর মাধ্যমে তিনি রয়টার্সের সর্বকনিষ্ঠ সংবাদদাতা হিসেবে নাম লেখান।
১৯৭০ থেকে ১৯৮০ এর পুরো দশক জুড়ে তিনি ডেইলি টেলিগ্রাফ সংবাদপত্র এবং বিবিসি টেলিভিশন নিউজের বৈদেশিক সংবাদদাতা হিসেবে সারা পৃথিবীতে কর্মরত ছিলেন। এই সময় তিনি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো ভারত পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, ল্যাটিন আমেরিকা ও ইউরোপে অস্থিতিশীল ঘটনাপ্রবাহ নিয়মিত তুলে ধরতেন সংবাদমাধ্যমগুলোয়। পেশাগত জীবনে তিনি ২২ টি যুদ্ধ এবং অভ্যুত্থান কাভার করেছেন।
ভিয়েতনাম যুদ্ধ এবং বাংলাদেশে গণহত্যার ওপর প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদন তাঁকে বিশ্বজোড়া খ্যাতি ও সুনাম এনে দেয়। সাইমন ড্রিং বাংলাদেশের গণহত্যার মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শী প্রথম বিদেশি সাংবাদিক, যিনি নিজের জীবন বিপন্ন করে সরোজমিনে প্রতিবেদন তৈরী করে সারা বিশ্বকে জানিয়ে দেন পাকিস্তানি বাহিনীর লোমহর্ষক নির্যাতন ও বর্বরতার চিএ।
সায়মন ড্রিং ১৯৭১ সালে ৩০ মার্চ ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় তাঁর প্রতিবেদন “ট্যাংকস ক্র্যাশ রিভোল্ট ইন পাকিস্তান” শিরোনামে তৎকালীন স্বৈরাচারী পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বর্বরতার চিত্র তুলে ধরেন।
তাঁর এই প্রতিবেদনটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল।এই প্রতিবেদনের জন্য তৎকালীন সময়ে তিনি “ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্টার অফ দা ইয়ার” পুরস্কারে ভূষিত হন।
১৬ ই ডিসেম্বর বিজয়ের দিনে যৌথবাহিনীর সাথে তিনিও ঢাকায় এসেছিলেন বাংলাদেশের বিজয়ের সাক্ষী হতে।
বরেণ্য এই সাংবাদিকের প্রয়াণে নিউজরুম বিডি ২৪ পরিবার শোকাহত।
নিউজরুম বিডি২৪