শ্রীমুখে পাঁচ সদস্যের গ্রাম গড়তে পারে গিনেজ রেকর্ড। – Newsroom bd24.
ঢাকাসোমবার , ১৯ জুলাই ২০২১

শ্রীমুখে পাঁচ সদস্যের গ্রাম গড়তে পারে গিনেজ রেকর্ড।

লিটন পাঠান, সিলেট প্রতিনিধি ।
জুলাই ১৯, ২০২১ ৯:৩৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

 

শ্রীমুখে পাঁচ সদস্যের গ্রাম গড়তে পারে গিনেজ রেকর্ড।

 

এক পরিবারে মাত্র পাঁচ সদস্য আর এতেই এক গ্রাম। যার নাম শ্রীমুখ আর এ গ্রামের বাসিন্দা কেবল আফতাব আলীর পাঁচ সদস্যের পরিবার। গ্রামটির অবস্থান সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার তেলিকুনা ও পশ্চিম নোয়াগাঁও নামে দুই গ্রামের মাঝখানে। মাত্র ৬০ শতক জায়গায় অবস্থিত এ গ্রামটিতে ৫ জনের বসবাস। গ্রামটিতে বসবাস করেন ১ জন পুরুষ, ৩ জন নারী এবং এক শিশু।

ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য অনুযায়ী এ গ্রামে ভোটার সংখ্যা মাত্র ৩ তিনজন। অনেকের দাবি এটিই এশিয়ার সবচেয়ে ছোট গ্রাম।

শাহ জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিকাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল সিলেটভয়েসকে বলেন দাগ খতিয়ান এবং মৌজা সকল কিছুতেই এটি শ্রীমুখ গ্রাম হিসেবে লিপিবদ্ধ রয়েছে।

 

এবং এ গ্রামের সদস্য সংখ্যা মাত্র ৫ জন তাই ধরেই নেওয়া যায় এটি বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গ্রাম। কারণ ইতোমধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গ্রাম হিসেবে খ্যাত ক্রোয়েশিয়ার ‘হাম’ নামক গ্রামটি যেখানে জনসংখ্যা ৩০ জন। এবং আঁকারে শ্রীমুখ গ্রামের থেকে অনেক বড়। সে হিসেবে বিশ্ব স্বীকৃতির জন্য এ গ্রাম নিয়ে সরকারের কাজ করা উচিৎ।
বর্ষায় চারপাশে পানিতে টইটুম্বুর আর শুষ্ক মৌসুমে ধানি জমি কিংবা জমির মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা গাছগুলো যেন এ গ্রামের ঐতিহ্যের সাক্ষী। গ্রামটি অবহেলিত হলেও পর্যটকদের নজর কাড়ার মতো ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায় দেশ ভাগের আগে একসময় শ্রীমুখ গ্রামটিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের বসবাস ছিলো। কালের বিবর্তনে গ্রামটি ছোট হতে থাকে, টিকে থাকে একটুকরো ভূমি আর একটি মাত্র পরিবার।

 

 

স্থানীয় পার্শ্ববর্তী এলাকাবাসীদের মতে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর, ১৯৬৪ সালে শ্রীমুখ গ্রামে একটি হিন্দু পরিবার বসবাস করতো বসবাস করা হিন্দু পরিবারটি অন্যত্র চলে যাওয়ার সময় বর্তমান বাসিন্দা আপ্তাব আলীর আপন মামা প্রতিবেশী পশ্চিম নোয়াগাঁও গ্রামের মরহুম হাবিব উল্লা’র কাছে শ্রীমুখ গ্রামের বাড়িটি বিক্রি করে অন্যত্র চলে যান তাঁরা। তিনি মারা যাওয়ার আগেই বর্তমান বাসিন্দা আপ্তাব’র মা মরহুমা কটাই বিবিকে দান করে দেন বাড়িটি। তখন থেকে ঐ বাড়িতে বসবাস করছেন আপ্তাব পরিবারের লোকজন গ্রামটিতে আসা যাওয়ার জন্য নিজস্ব বা নির্দিষ্ট কোন রাস্তা নাই। তাই প্রতিবেশী গ্রামের অন্যের ক্ষেতের জমির আলের উপরে দিয়েই আসা যাওয়া করতে হয় এমনকি সুপেও পানিরও সংকট রয়েছে এ গ্রামে বর্ষায় চলতে হয় নৌকায়।

 

পরিবারের একমাত্র কর্তা আপ্তাব আলী বর্তমানে প্রবাসে আছেন সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় তাঁর স্ত্রীর সাথে। স্ত্রী রাহিমা বেগম জানালেন দুর্ভোগের কথা
বলেন, সরকার অনেক উন্নয়ন করছে কিন্তু আমাদের গ্রামটিতে সরকারের কোন দৃষ্টি নাই গ্রামটির নিজস্ব কোন রাস্তা নাই। অন্যের ধানী ক্ষেতের জায়গা দিয়েই যাতায়াত করতে হয় বাচ্চাদের স্কুলে যেতেও নানান সমস্যায় পড়তে হয় একমাত্র টিউবওয়েলটিও বর্তমানে নষ্ট প্রায় সরকারি ভাবে কোন ডিপ টিউবওয়েল না পাওয়ার কারণে পুকুরের পানি পান করতে হয়। বর্তমান সরকারের আমলে বিদ্যুৎ পেলেও তাতেও নানান সমস্যার কথা বলেন তিনি।
শ্রীমুখ গ্রামে যেতে হলে সিলেট থেকে বিশ্বনাথ উপজেলা সদর থেকে মাত্র ২০ মিনিটের রাস্তা মধ্যখানে রামপাশা বাংলার রাখাল রাজা হাসন রাজার বাড়ি।

 

তবে আশার বাণী শোনালেন বিশ্বনাথ উপজেলার চেয়ারম্যান নুনু মিয়া। তিনি বলেন, “আমি পরিকল্পনা মন্ত্রীর সাথে এ গ্রাম নিয়ে কথা বলে এসেছি। শ্রীমুখ গ্রামটিকে কি ভাবে বিশ্বের বুকে একটি স্বীকৃতি নেওয়া যায় এটি নিয়ে পরিকল্পনা চলছে। আপাতত বিশ্ব স্বীকৃতি, রাস্তা, গ্রামের সুপেয় পানির ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্য এ চারটি বিষয় নিয়ে আমি কাজ শুরু করেছি।

 

 

  • নিউজরুম বিডি ২৪.

 

   
%d bloggers like this: