” বিদ্যাপীঠ ” এ যেন শিশু কিশোর কিশোরীর প্রাণোচ্ছলতা,মানসিক আর মানবিক বিকাশের সুসজ্জিত বাগান।
আজ শুনশান নিরবতায় শিক্ষা কেন্দ্রের কাঠামো দাঁড়িয়ে আছে কোথাও কেউ নেই । দরজা জানালা, ব্ল্যাকবোর্ড, চেয়ার টেবিল, বেঞ্চ, চক ডাস্টার, লাইব্রেরীতে সেল্ফ ভর্তি বই সবকিছু বড় একা আজ। শিক্ষার্থী দের কলকাকলি আর ছুটির ঘন্টা বিহীন ই-শিক্ষা সাম্রাজ্য ভৌতিক রাজ্যে পরিণত হয়েছে।
সবকিছুতেই ধুলো পড়ে গেছে। এ যেন কষ্টের ধূলি ধূসরিত এ প্রাঙ্গণ। মনের অজান্তেই প্রতিটি শিক্ষার্থী হারিয়ে ফেলছে তাদের কোমলমতি মনের প্রাণোচ্ছলতা ও মানসিক বিকাশ।
দিনে দিনে এক ধরনের বিরক্ত তৈরি হচ্ছে তাদের মানসিকতায়, রোবট এ পরিণত হয়ে যাচ্ছে প্রাণোচ্ছল এ শিক্ষার্থীরা। নিত্যদিনের জীবনযাত্রায় সঠিক রুটিন থেকে ক্রমান্বয়ে বাইরে চলে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ভার্চুয়াল ডিভাইস কেন্দ্রিক শিক্ষা তাদের জীবনের গতিপথ কে বদলে দিচ্ছে অজান্তেই।
এবার আসি আমাদের কষ্টের দ্বিতীয় ধাপে
যদিও শিক্ষা কেন্দ্র গুলো সবই বন্ধ। বন্ধ রয়েছে কেন্দ্রের নিত্যনৈমিত্তিক খরচ। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা ও কার্যনির্বাহী সকল সহযোগী -সহকর্মী সকলেরই বেতন-ভাতা থাকছে অপরিশোধিত, হয়তোবা কোথাও কোথাও আংশিকভাবে পরিশোধিত হচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে শিক্ষা কেন্দ্রের বাড়তি কোন ব্যয় নেই, নেই স্কুলের নেই শিক্ষা কেন্দ্রের ট্রান্সপোর্টেশন খরচ। শিক্ষকগণ নিজ বাড়িতে বসেই এক থেকে দুই ঘণ্টার অনলাইন ক্লাস এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাশে রয়েছেন। শ্রদ্ধা রইল সকল শিক্ষকদের প্রতি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হলে দেখা যাবে প্রতি মাসের বেতন সহ পূর্বের নিয়মিত সকল ভাতা প্রদানের নোটিশ অভিভাবকদের ইমেইল অথবা ফোনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের বার্তা ঘন্টা বেজে চলবে।
এ সমাজের নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো করোনার কষাঘাতে সব হারিয়ে বেকারত্বের অভিশাপে কেউ কেউ হয়তো ছেড়ে চলে গেল এই স্বপ্ননগরী। আবার কেউবা তীব্র যন্ত্রণা বুকে নিয়েও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আলোকিত ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় আঁকড়ে ধরে আছে কনক্রিটের এই নগরী। এরই মাঝে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাড়তি বকেয়া বেতন পরিশোধের তাড়া, তাড়িয়ে বেড়াচ্ছ প্রতিটি পরিবারে।
করোনা ক্রান্তি একটি সময় থেমে যাবে, আবার নতুন সাজে সাজবে নগরী, কোলাহলপূর্ণ এ নগরী ফিরে পাবে তার স্বরূপ। দীর্ঘদিনের এ ক্লান্তি ও হতাশা থেকে একটু পরিত্রান পাবার অপেক্ষায় আমরা।
শিক্ষানীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে উচ্চ পর্যায় থেকে নির্বাহী আদেশ আসার পূর্বেই এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সজাগ দৃষ্টি ও এর সঠিক বাস্তবায়ন এর ছোঁয়া তে ফিরে আসতে পারে ভুক্তভোগী এ পরিবারগুলোতে।
অভিমত
যেহেতু নিত্যদিনের খরচগুলো বিদ্যালয় গুলোতে নেই।
নেই বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস এর বাড়তি কোনো খরচ। নিয়মিত শিক্ষকসহ অন্যান্য কর্মীদের পূর্ণ বেতন প্রধান ব্যবস্থাও হয়তো হচ্ছেনা শিক্ষা কেন্দ্র গুলোতে। স্কুলের আপ্পায়ন ব্যয় হচ্ছে না।
এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে শিক্ষার্থীদের বকেয়া বেতন গ্রহণের ক্ষেত্রে অর্ধ বেতন গ্রহণ করা যেতে পারে। পাশাপাশি স্কুলের উন্নয়ন ফিসহ অন্যান্য ভাতা গ্রহন করা থেকে বিরত রাখাই শ্রেয়। বিষয়টি বাস্তবায়িত হলে তাতে অন্তত প্রতিটি পরিবারে টু হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস আসবে।
শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা রইল যারা প্রতিকূল পরিবেশেও আমাদের সন্তানদের পাশে রয়েছেন।
শিক্ষা বিষয়ক আইন প্রণেতা ও বাস্তবায়ন কমিটির সহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুদৃষ্টি প্রতিটি পরিবারে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে আসবে।
সবাই ভালো থাকি , সুস্থ থাকি , নিজেকে নিরাপদে রাখি পরিবারকে নিরাপদে রাখি, নিয়মিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি।
নিউজরুম বিডি২৪।