করোনাকালীন শিশুর মানসিক স্বাস্হ্য। – Newsroom bd24.
ঢাকাশুক্রবার , ২ জুলাই ২০২১

করোনাকালীন শিশুর মানসিক স্বাস্হ্য।

কলাম লেখক ঃ সৈয়দ মিজানুর রহমান।
জুলাই ২, ২০২১ ১:১২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

করোনাকালীন শিশু-কিশোর ও তাদের মানসিক স্বাস্থ্য।

দীর্ঘদিন গৃহবন্দী থাকার ফলে শিশুকিশোররাই সবচাইতে বেশি মেন্টাল হেলথ ক্রাইসিসে ভুগছে।
হয়তোবা আমরা বিষয়টি নজরে আনছি না। আমরা এতটুকুই ভাবছি যে শিশু বা কিশোরটি শারীরিকভাবে সুস্থ আছে কিনা।
একটু লক্ষ করলেই দেখা যাবে এই শিশু অথবা কিশোরটি তার পূর্বের দৈনন্দিন জীবনযাপনের যে ধারাবাহিকতা ছিল সে নিয়মের গণ্ডি থেকে মনের অজান্তেই দূরে সরে যাচ্ছে সে প্রতিনিয়ত।

প্রতিটি শিশু এবং কিশোরদের মানসিক বিকাশের অন্যতম একটা স্থান হচ্ছে তার বিদ্যাপীঠ। যেখানে সে প্রতিদিনই একটু একটু করে নিজেকে তৈরি করে নেবার শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। এই করোনাকালে সেই জায়গাটি থেকে শিশু-কিশোররা একেবারে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন।

শিশু-কিশোরদের ঘর বন্দী হয়ে পড়াটাই মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশের ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধকতা। একটু খেয়াল করে দেখবেন প্রতিটি শিশু কিশোর একঘেয়ে আর খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে।
ইচ্ছে করলেই সম্ভব হয়ে উঠছে না ওদের স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিপালনের। মনের অজান্তেই ওদের মধ্যে তৈরি হয়ে যাচ্ছে মেন্টাল হেলথ ক্রাইসিস।
ওদের মানসিক চিন্তা চেতনা আর খেলাধুলা, পারিবারিক আনন্দ আয়োজনের বাইরেই চলে যাচ্ছে ওরা অজান্তে ই।

আমার আপনার কাছে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করছে তার চাইতে বেশি স্বাচ্ছন্দ ওদের ভার্চুয়াল ডিভাইস নিয়ে। এই ভার্চুয়াল ডিভাইস ওদের শিশু আর কিশোরসুলভ মনোভাবকে খিটখিটে আর অস্বাভাবিক করে তুলছে।

সুস্থ সুন্দর পারিবারিক ভাবে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে সুপ্ত একটি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে ধীরে ধীরে যা হয়তো আমাদের অবলোকনের বাইরে।

একটা অজানা শক্তি তৈরি হচ্ছে ওদের মস্তিস্কের নিউরনে। দিনে দিনে বেড়ে উঠছে ওরা, পার হয়ে যাচ্ছে ওদের সোনালী অতীত, উচ্ছলতা আর প্রাণবন্ত আচরণ আগের মত করে আর চোখে পড়ছে না। দিনে দিনে সরে যাচ্ছে ওরা আনন্দ হাসি খেলাধুলা আর নিত্য কর পড়াশোনা থেকে। খোলা মাঠ, পরিবারের সাথে বেড়ানোর জায়গা এগুলো ক্রমশই অপরিচিত হয়ে উঠছে ওদের কাছে।

আসলে আমাদের এই অবস্থায় আমরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হলে আমরা ওদের মাঝে উচ্ছলতা গুলো হারিয়ে ফেলবো। আমাদের প্রতিটি পরিবারকে এগিয়ে আসতে হবে অন্তত বর্তমান প্রেক্ষাপট মেনে নিয়ে, আর নিজেকে মানিয়ে নিয়ে। নিজেদের কাজের পাশাপাশি বাড়তি সময় আমরা আমাদের শিশু-কিশোরদের পাশে থাকবো।
আমরা প্রতিদিনকার জন্য কিছু হোমটাস্ক প্ল্যান তৈরি করে দিতে পারি। যাতে ওরা নিজেদের গুছিয়ে রাখা সহ পরিবারের প্রতি আগ্রহ ও দায়িত্ববোধের একটা জায়গা তৈরি করে নিতে পারে। সে ক্ষেত্রে মানসিক বিকাশ ঘটানোর একটা চমৎকার প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েও যেতে পারে। আর আমাদের শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রে যোগ হতে পারে এক নতুন সম্ভাবনা। যেমন,

১.প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠার পর ওদের কি করনীয় জানিয়ে দিন।

২.ওদের জামা কাপড়, বই খাতা, ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখার দায়িত্ব দিন।

৩.মজাদার খাবার তৈরীর উপকরণ জানিয়ে দিয়ে ওদের খাবার তৈরিতে সহায়তা করুন।

৪. ওদের কাছ থেকে মজাদার গল্প শুনতে আগ্রহ প্রকাশ করুন।
৫.মায়ের সাথে কাজের সহযোগিতা ও ছবি আঁকার ক্ষেত্রে উৎসাহ প্রদান করুন।

ওদের দায়িত্ব দিন। উৎসাহিত করুন। আর হাসিমুখে পাশে থাকুন। ইনশাআল্লাহ এ শিশু কিশোররাই বদলে দেবে আপনার আমার সবার পৃথিবী।

   
%d bloggers like this: