উপচে পরা ভির ফেরিঘাটে – Newsroom bd24.
ঢাকামঙ্গলবার , ২৯ জুন ২০২১

উপচে পরা ভির ফেরিঘাটে

নিউজরুম বিডি২৪
জুন ২৯, ২০২১ ৩:৪১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আবারও উপচে পড়া ভিড় ফেরিঘাটে

গাঁয়ে গাঁ ঘেঁষে, সঙ্গে থাকা ব্যাগ কোনরকমে মাথায় চাপিয়ে যে যেভাবে পারছেন ছুটছেন বাড়ির পথে, এরকম দৃশ্য দেখা যায় কাঠালবাড়িয়া- শিমুলিয়া ফেরিঘাটে। গাঁয়ে গাঁ লাগিয়ে কোনো রকমে মাথা জাগিয়ে দুই পায়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন যাত্রীরা। এদের অনেকের মুখেই নেই মাক্স, মানা হচ্ছে না কোন স্বাস্থ্যবিধি। অ্যাম্বুলেন্স, ট্রাক আর প্রাইভেটকার মিলিয়ে ডজনখানেক গাড়ি আর সহস্রাধিক যাত্রী নিয়ে মঙ্গলবার সকালে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট থেকে পদ্মার ওপারে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ফেরিটি।
করনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার কর্তৃক ঘোষিত বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন এ যাত্রীরা।

গণপরিবহনের বন্ধ থাকায় যাত্রীদের পড়তে হয়েছে চরম ভোগান্তিতে। অনেকে পায়ে হেঁটে ভেঙে ভেঙে
পৌঁছেছেন ফেরিঘাট পর্যন্ত। যার ফলে গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া ও। যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায় লকডাউনের কঠোর বিধি-নিষেধ এবং পরিস্থিতি বেগতিক হওয়ার আশঙ্কায় তারা আগে থেকে নিজ নিজ পরিবারের কাছে ফিরে যাচ্ছেন।
গণপরিবহন বন্ধ কিংবা কোনো বিধিনিষেধ যেন তাদেরকে আটকাতে পারছেনা।
সারাদেশে ‘লকডাউন’ জারির ঘোষণা আসার পর গত শুক্রবার থেকেই চলছে এ পরিস্থিতি। প্রতিদিন ফেরি বোঝাই করে মানুষ ছুটছেন বাড়ির পথে।

বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে ছুটে চলা মানুষকে আটকাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।
নৌ পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ পরিদর্শক(মাওয়া) মো. সিরাজুল কবির নিউজরুমবিডি২৪ কে বলেন, “

মানুষ কিছুই বোঝার চেষ্টা করছেন না। পরিস্থিতি যেন তাদের কাছে বোধগম্য নয়। ঘাটে পৌঁছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরির জন্য অপেক্ষা করছেন এই যাত্রীরা। কোনো ফেরি ঘাটে ভিড়লে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন তারা। এমনকি জরুরী সেবা দানকারী গাড়ি (আম্বুলেন্স) এর জন্যও ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না।
যাত্রীবাহী বাস, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল লকডাউনে বন্ধ থাকলেও, , “জরুরি পরিষেবার জন্য সচল রাখা ফেরি এখন যাত্রীদের দখলে। যাত্রীর চাপ সামাল দিতে এই রুটের ১৬টি ফেরির ১৫টিই চালাতে আমরা বাধ্য হচ্ছি। তারপরও হিমশিম খেতে হচ্ছে। যাত্রীরা কোনো কথা শুনতে রাজি না।”শিমুলিয়া ঘাটে বিআইডব্লিউটিসি ব্যবস্থাপক আহাম্মদ আলী জানান।
ঘাটমুখী এই জনস্রোত ঠেকাতে সিরাজদিখান, শ্রীনগর ও শিমুলিয়ার হিলশা মোড়ে পুলিশের তিনটি চেকপোস্ট বসানো রয়েছে। মহাসড়ক ধরে আসলে ওই তিন চেকপোস্ট পার হতে হয়।


পণ্যবাহী ট্রাক ও জরুরি সেবার যানবাহন পারাপারের জন্য শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে ফেরি চালু রেখেছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গাড়ি ওঠার আগেই ফেরি দখল করেছে ঘাটে অপেক্ষায় থাকা মানুষ।
পরিদর্শক সিরাজুল কবির বললেন, “ঘাটে যারা চলেই আসছে, তাদের দ্রুত পার করে দেওয়ার চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ।

শিমুলিয়া ঘাটে বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা জানান, প্রায় ১১ কিলোমিটারের এই নৌপথে তিন ধরনের ফেরি চলে। রো রো ফেরি, ডাম্প ফেরি আর মিডিয়াম ফেরি।

এর মধ্যে সবচেয়ে বড় রো রো ফেরিতে ২৫ থেকে ৩০টি যানবাহন পরিবহন করা যায়। আর গাড়ি না তুললে তিন থেকে চার হাজার মানুষের জায়গা হয়।
শিমুলিয়া ঘাটে বিআইডব্লিউটিসি ব্যবস্থাপক আহাম্মদ আলী বলেন, “জরুরি পরিষেবার জন্য সচল রাখা ফেরি এখন যাত্রীদের দখলে। যাত্রীর চাপ সামাল দিতে এই রুটের ১৬টি ফেরির ১৫টিই চালাতে আমরা বাধ্য হচ্ছি। তারপরও হিমশিম খেতে হচ্ছে। যাত্রীরা কোনো কথা শুনতে রাজি না।”

সারা দেশে করোনারর সংক্রমণ লক্ষণীয় হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অবস্থায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেন সব যাত্রীর বাড়ির পথে রওনা হয়েছেন?
যাত্রীদের কয়েকজনের সাথে কথা বললে জানা যায়, এদের বেশিরভাগই নিম্নআয়ের মানুষ। লকডাউনে অনেকেরই কাজ বন্ধ হয়ে যাবে। যারা দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন তাদের সকলের কাজ বন্ধ। কাজ বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় বাড়িতে ফিরে যাওয়াই তাদের কাছে এখন একমাত্র উপায় মনে হচ্ছে। কারণ কাজ বন্ধ থাকলে কয়েক সপ্তাহ শহরে টিকে থাকা তাদের পক্ষে সম্ভব না। শ্রমজীবী এ সকল মানুষ অনেকটা নিরুপায় হয়েই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করেছেন।

   
%d bloggers like this: