যুক্তরাষ্ট্রে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনা বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। দেশটির রাজনীতিক ছাড়াও বিশ্ব নেতৃবৃন্দ তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এ ঘটনাটি আমেরিকার ইতিহাস, রাজনীতি ও নভেম্বরের নির্বাচনে কেমন প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে বিশ্লেষণ।
নর্থ আমেরিকা এডিটর সারাহ স্মিথ লিখেছেন, মুখে রক্ত নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প মুষ্টিবদ্ধ হাত ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছেন এবং সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যরা তাকে মঞ্চ থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন—এ ছবি শুধু ইতিহাস বানায়নি বরং এগুলোই নভেম্বরের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনের হিসাবনিকাশ পালটে দিতে পারে।
জঘন্য এই রাজনৈতিক সহিংসতার নিঃসন্দেহে প্রভাব পড়বে নির্বাচনি প্রচারণায়। ছবিটি দ্রুতই সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছেন ট্রাম্পের ছেলে এরিক ট্রাম্প, আর ক্যাপশন দিয়েছেন : ‘এই সেই যোদ্ধা যাকে আমেরিকার দরকার’। ঘটনার পরপর একটি টেলিভিশনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এ ধরনের সহিংসতার জায়গা আমেরিকায় নেই।
তিনি তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বাইডেনের নির্বাচনি প্রচার দল সব ধরনের রাজনৈতিক বিবৃতি বন্ধ রেখেছে এবং দ্রুতই টেলিভিশন বিজ্ঞাপনগুলো না দেওয়ার জন্য কাজ করছেন। কারণ তাদের বিশ্বাস ট্রাম্পের ওপর হামলার এই সময়ে এগুলো মানানসই হবে না। বরং যা ঘটেছে তার নিন্দা জানানোর দিকে মনোযোগ দেওয়াই হবে শ্রেয়। সব মতের রাজনীতিকরাই এক হয়ে বলছেন যে গণতন্ত্রে সহিংসতার জায়গা নেই।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ, বিল ক্লিনটন এবং জিমি কার্টার দ্রুতই এ সহিংসতার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং ট্রাম্প গুরুতর আহত হননি শুনে তারা কতটা স্বস্তি পেয়েছেন সেটি বলেছেন। কিন্তু ট্রাম্পের কিছু ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং সমর্থকরা সহিংসতার জন্য বাইডেনকে দোষারোপ করা শুরু করেছেন। একজন রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান সামাজিক মাধ্যম এক্সে প্রেসিডেন্টকে অভিযুক্ত করেছেন ‘হত্যাকাণ্ডের উসকানি দেওয়ার জন্য’।
সিনেটর জেডি ভান্সকে মনে করা হচ্ছে ট্রাম্পের সম্ভাব্য ভাইস প্রেসিডেন্টদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন। তিনি বলেছেন, বাইডেনের প্রচারণাই সরাসরি এ ঘটনার দিকে নিয়ে গেছে। একই ধরনের বক্তব্য এসেছে আরো কয়েক জন রিপাবলিকান রাজনীতিকের দিক থেকেও। ধারণা করা যায়, এর প্রতিবাদ নিশ্চিতভাবেই তাদের প্রতিপক্ষের দিক থেকে আসবে আমেরিকার রাজনীতির বিপজ্জনক এই সময়ে ঘৃতাহুতি হিসেবে। আমরা এখনি লড়াইটা দেখতে পাচ্ছি যা সামনে আরো কুৎসিত হয়ে উঠতে পারে, যা আসলে নির্বাচনি প্রচারণার প্রক্রিয়াই বদলে দেবে।